পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকের পরেই বার্তা দিয়েছিল ইসলামাবাদ। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাওয়াজ়া আসিফ পহেলগাঁও সন্ত্রাসের দায় এড়ানোর পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ভারতের তরফে সামরিক পদক্ষেপ করা হলে ‘সর্বশক্তি দিয়ে প্রত্যাঘাতে’র। এর পরেই পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির পাক সেনার নির্দিষ্ট কয়েকটি কোর এবং ইউনিটকে সক্রিয় হওয়ার বার্তা দিয়েছেন বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানাচ্ছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) এবং ভারত-পাক স্বীকৃত আন্তর্জাতিক সীমান্তের পাশাপাশি রাজধানী ইসলামাবাদ এবং সেনা সদর রাওয়ালপিন্ডি এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ১০ নম্বর কোরকেও বিশেষ সতর্কবার্তা পাঠিয়েছেন জেনারেল মুনির। অতীতে একাধিক সেনা অভ্যুত্থানে যোগ দেওয়া এই বাহিনীরই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উত্তরাংশের স্বশাসিত গিলগিট বালটিস্তান অঞ্চল। রাওয়ালপিন্ডি-স্থিত ‘এয়ার ডিফেন্স কমান্ড’ এবং ‘স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ড’ও সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি।
সাধারণ ভাবে নিয়ন্ত্রণরেখায় নজরদারি এবং আইএসআই মদতপুষ্ট জঙ্গি প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে পাক সেনার ১ নম্বর কোর। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মিরপুর জেলার মঙ্গলায় ওই বাহিনীর সদর দফতর। এই কোরের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে, পাক ফৌজ, আধাসেনা রেঞ্জার্স এবং জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির বিশেষ প্রশিক্ষিত মুজাহিদদের নিয়ে গড়া ‘ব্যাট’ (বর্ডার অ্যাকশন টিম) বাহিনী। কয়েক বছর আগে জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনা জওয়ানের মুণ্ড কেটে নিয়েছিল এই দল। অতর্কিতে হামলা চালিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া এই দলের অন্যতম কাজ।
২০১৯ সালে পুলওয়ামা সন্ত্রাসের পরে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় বালাকোটের জঙ্গিশিবিরে হানা দিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান। সেই ঘটনা মাথায় রেখে গিলগিট বালটিস্তানের স্কার্ডু বায়ুসেনা ঘাঁটিতে বাড়তি ফাইটার জেট মোতায়েন করেছে পাক বিমানবাহিনী। সেই সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে দ্রুত সেনা এবং সামরিক সরঞ্জাম পরিবহণের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে মার্কিন ‘ট্যাকটিক্যাল এয়ার লিফ্টার’ সি-১৩০ই হারকিউলিস।