Advertisement
E-Paper

‘অন্তরটা ঠান্ডা হৈল’! হাসিনার ফাঁসির সাজা শুনে খুশি রবার বুলেটের সামনে বুক পেতে দেওয়া আবু সাঈদের বাবা

রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের রবার বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ। ছোট্ট বাঁশের লাঠি নিয়ে দু’হাত প্রসারিত করে পুলিশের উদ্যত বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৪৪
Abu Sayeed

পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ। —ফাইল ছবি।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির সাজা শোনানোর পরেই খুশির হাওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের ‘শহিদ’ আবু সাঈদের পরিবারে। মিষ্টিমুখ করানো হল প্রতিবেশী এবং বাড়িতে আগত অতিথিদের। পুত্রহারা মকবুল হোসেন জানান, এখন তাঁর চাওয়া একটাই— যেন হাসিনাকে ভারত থেকে দ্রুত বাংলাদেশ নিয়ে গিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের রায় কার্যকর করা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ‘সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ’ মামলায় হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সন্তুষ্ট মকবুলের মন্তব্য, ‘‘অন্তরটা ঠান্ডা হৈল।’’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশে আন্দোলনে নেমেছিলেন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। সেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ। সে বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের রবার বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। ছোট্ট বাঁশের লাঠি নিয়ে দু’হাত প্রসারিত করে পুলিশের উদ্যত বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশের বন্দুক থেকে ছুটে আসা পর পর রবার বুলেটের আঘাতে লুটিয়ে পড়েছিলেন মাটিতে। সেই ছবি কখনও ভুলতে পারবেন না বলে জানান আবু সাঈদের বাবা।

আবু সাঈদদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়া এলাকায়। বাড়িতে বসেই হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের রায় শুনে সাঈদের জন্মদাতা ‘প্রথম আলো’কে বলেন, ‘‘আমি খুশি হৈছি। ভারত থাকি আনি অতি দ্রুতগতিতে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে বাংলার মাটিতে। তা হলে আমি আরও খুশি হব (আমি খুশি হয়েছি। ভারত থেকে এনে অতি সত্ত্বর বাংলাদেশের মাটিতে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে)।’’ একই প্রতিক্রিয়া সাঈদের মা মনোয়ারা বেগমের। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে নাই... (সে জন্য) খারাপ লাগছে। ফাঁসির রায় যেন কার্যকর হয়।’’

ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ে ছয়টি অংশ রয়েছে। রায়ে বলা হয় হাসিনা-সহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত। দু’টি অভিযোগে হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একটি অভিযোগে বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও একই শাস্তি দেওয়া হয়। রাজসাক্ষী হওয়ায় সে দেশের প্রাক্তন পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওই রায়ের খবর শোনার পর থেকে সাঈদের বাড়িতে যাওয়া সকলকে মিষ্টি খাওয়ানো হয়েছে। সাঈদের দাদা আবু হোসেন বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা দীর্ঘ সময় ফ্যাসিবাদী সিস্টেম কায়েম করে অনেককে খুন করেছেন। আয়নাঘরে বন্দি করেছেন। আমার নিরস্ত্র ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এই গণহত্যা শুরু হয়েছিল। শেষে হাসিনা পালাতে বাধ্য হন। তাঁকে দেশে এনে রায় কার্যকর হোক।’’

ওই রায়ের পর মিছিল করে মিষ্টি বিতরণ হয়েছে আবু সাঈদ যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছিলেন সেখানে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ শওকত আলি জানান, এই রায়ে তিনিও খুশি।

Sheikh Hasina Death Penalty Bangladesh Unrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy