Advertisement
E-Paper

পাক সেনা ক’জন পণবন্দিকে মুক্ত করল? হতাহতের সংখ্যাই বা কী? অভিযান শেষের পরেও ধন্দ বালোচিস্তানে

পাক সেনার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরি এবং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সরকারের তথ্যমন্ত্রী আত্তাউল্লাহ তরার উদ্ধার করা রেলযাত্রীর নির্দিষ্ট সংখ্যা বলেননি।

বালোচিস্তানে পাক সেনা।

বালোচিস্তানে পাক সেনা। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫ ১২:৩৪
Share
Save

সরকারি ভাবে অভিযানের ইতি টানা হয়েছে বুধবার রাতে। বালোচিস্তানের কাচ্চি বোলানে জাফর এক্সপ্রেস কব্জার ঘটনায় উদ্ধারপ্রাপ্ত এবং হতাহতের সংখ্যা নিয়ে ধন্দ কাটেনি বৃহস্পতিবার দুপুরেও। পাক সেনার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরি এবং প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকারের তথ্যমন্ত্রী আত্তাউল্লাহ তরার যে পরিসংখ্যান দিয়েছেন স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) তা সরাসরি অস্বীকার করেছে।

ইসলামাবাদের দাবি, মঙ্গলবার সকালে বালোচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারগামী ট্রেনটি বালোচ বিদ্রোহীরা কব্জায় আনার সময় তাতে ৪৪০ জন সওয়ারি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৩০০ জনেরও বেশি যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু সেনা বা সরকারের তরফে উদ্ধার করা যাত্রীদের সংখ্যা জানানো হয়নি। একই ভাবে বিতর্ক রয়েছে হতাহতের সংখ্যা নিয়েও। পাক সেনার দাবি, তারা ৩৩ জন বিদ্রোহীকে খতম করেছে। নিহত হয়েছেন ২১ জন রেলযাত্রী এবং আধাসেনা বাহিনী ফ্রন্টিয়ার কোরের চার জন জওয়ান।

কিন্তু বিএলএ-র তরফে বৃহস্পতিবার দাবি করা হয়েছে, তাদের ৩৩ জন যোদ্ধা নিহত হওয়ার যে দাবি পাক ফৌজ করছে, তা অসত্য। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে কুনরি এবং গাদালারের মাঝামাঝি এলাকায় মাশকাফের আট নম্বর পাহাড়ি সুড়ঙ্গের সামনে জাফর এক্সপ্রেস কব্জায় আনার পরেই ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল বিএলএ। বালোচিস্তান থেকে পাকিস্তান এবং চিনকে হাত গোটানোর শর্ত দেওয়ার পাশাপাশি বালোচ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির শর্ত রেখেছিল তারা। কিন্তু সেই দাবি না মেনে, পাক সেনার ‘স্পেশ্যাল সার্ভিস গ্রুপ’ (এসএসজি) এবং ফ্রন্টিয়ার কোরের কমান্ডোরা অভিযান শুরু করেন। বুধবার রাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবার রাত থেকেই বালোচ বিদ্রোহীদের উপর পাক সেনার বেল এএইচ-১ কোবরা হেলিকপ্টার হামলা শুরু করে বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি। মূলত, সুড়ঙ্গের আশপাশের পাহাড়ে অবস্থান নেওয়া বিদ্রোহীদের নিকেশ করতেই ‘থার্মাল ইমেজিং সেন্সর’ ব্যবহার করে ভারী মেশিনগানের গুলি এবং বোমাবর্ষণ চলে। বুধবার ভোরের আলো ফুটতেই ৮ নম্বর বাদে মাশকাফের বাকি ১৬টি সুড়ঙ্গকে বিদ্রোহী-মুক্ত করার অভিযান শুরু করে পাক ফৌজ। দুপুর গড়াতে শুরু হয় চূড়ান্ত পর্যায়ের অভিযান। লেফটেন্যান্ট জেনারেল শরিফের দাবি, বিএলএর ফিদায়েঁ (আত্মঘাতী) বাহিনী মজিদ ব্রিগেডের যোদ্ধারা বিস্ফোরক ভরা ‘সুইসাইড ভেস্ট’ পরে পণবন্দিদের ঘিরে রাখায় উদ্ধারের কাজে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঝটিতি কমান্ডো হামলা চালানো হয় মজিদ ব্রিগেডের উপর। আর তাতেই আসে সাফল্য।

বুধবার রাতে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত একটি খবরে দাবি করা হয়, কোয়েটা স্টেশনে মজুত করা হয়েছে প্রায় ২০০টি কফিন! ঠিক তার আগেই বিএলএ-র তরফে ৫০ জন পণবন্দিকে খুনের দাবি করা হয়েছিল। ফলে ইসলামাবাদ ২১ জন যাত্রীর মৃত্যুর দাবি করলেও তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সংশয় রয়েছে, সেনা অভিযানে মুক্তি পাওয়া যাত্রীর সংখ্যা নিয়েও। কারণ, অপহরণের পরেই মহিলা, শিশু এবং বালোচ জনগোষ্ঠীর যাত্রী মিলে প্রায় ২০০ জনকে মুক্তি দিয়েছিল বিদ্রোহীরা। সে কথা খোলাখুলি স্বীকারও করেছেন মুক্তিপ্রাপ্তেরা। বালোচ বিদ্রোহীদের মূল অভিযোগ ‘পঞ্জাবি আধিপত্যবাদের’ বিরুদ্ধে। জাফর এক্সপ্রেসের যাত্রী পঞ্জাবি অসামরিক পুরুষ এবং সেনা-আধাসেনা কর্মীদেরই মূলত পণবন্দি বানিয়েছিলেন তাঁরা।

Balochistan Liberation Army Balochistan Pakistan PAkistan Army Train Hijacked

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}