করোনা-ত্রাস। ছবি: এএফপি।
করোনাভাইরাসের হানায় হু হু করে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে চিনে। ইতিমধ্যেই ৮০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে সংখ্যাটি। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, এই ভাইরাসের মূল উত্স কালাচ বা কেউটে জাতীয় সাপ। পাশাপাশি তাঁরা একটা আশঙ্কার বাণীও শুনিয়েছেন। করোনার সমগোত্রীয় যে সব ভয়ানক ছোঁয়াচে রোগ এর আগে বিশ্বে ছড়িয়েছে তার জন্য মূলত দায়ী বাদুড়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, উগান্ডা, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় মারবার্গ, নিপা এবং হেন্ড্রা-র মতো যে সব ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল সে ক্ষেত্রেও ‘খলনায়ক’ ছিল এই স্তন্যপায়ী প্রাণিটি। বাদুড়ের শরীর নানা রকম মারণ ভাইরাসের আঁতুড় ঘর বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এদের দেহে ইবোলা, রেবিস সার্স, মার্স-এর মতো ভাইরাসের বাস। তার মধ্যে সার্স ও মার্স ভাইরাস যা সম্প্রতি চিনের করোনাভাইরাসের সমগোত্রীয় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা এটাও বলছেন, সব সময় এই ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণের জন্য বাদুড়ই দায়ী এমনটা নয়। ২০০৩-এ যে সার্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা বিশ্বে, বাদুড় ছাড়াও ওই ভাইরাসের উত্স হিসেবে ভাম বিড়ালকেও দায়ী করা হয়েছিল। অন্য দিকে, ২০০০ সালে যে মার্স ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল উটের শরীরে। মূলত পশুদের থেকে মানবদেহে এই ভাইরাস সংক্রামিত হয়। সে জন্য বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাসগুলোকে ‘জুনোটিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শুধু চিনেই ৮০০! মৃত্যুর সংখ্যায় সার্স-কে পিছনে ফেলল করোনা
আরও পড়ুন: ‘লৌহপুরুষ’-এর চোখে জল! 'শিকারা' দেখে কেঁদে ফেললেন আডবাণী
লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের ভাইরোলজিস্ট তাই বলেছেন, “করোনাভাইরাসের সঙ্গে বাদুড়ের যোগ পাওয়া গেলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।” চিনে বাদুড় নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই গবেষণা চলছে। গত বছরে উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির বিজ্ঞানীরা একটি পর্যবেক্ষণের পর আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, মারণ ভাইরাস হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে করোনা। এবং সে ক্ষেত্রে হটস্পট হিসেবে উঠে আসতে পারে চিন। কিন্তু কখন, কোথায় এই ভাইরাস হানা দেবে সে বিষয়টি খুঁজে বার করে তা সংক্রমণ ঠেকানোই ছিল তাঁদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
তবে বিজ্ঞানীরা এটাও বলছেন যে, উহানে করোনাভাইরাস যে বাদুড় থেকেই এসেছে সেটা এত তাড়াতাড়ি বলে দেওয়া সম্ভব নয়। মাঝে কোনও বাহক ছিল কি না সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। সামুদ্রিক জীব বিক্রি হয় এমন বাজার থেকে করোনাভাইরাসের আমদানি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু এর আসল উত্স নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তা নিয়েই বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন।
চিনের সেন্টার ফর ডিসিজ কন্ট্রোল-এর এক বিজ্ঞানী এ প্রসঙ্গে দাবি করেন, যে সময় উহানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়, সে সময় সামুদ্রিক জীবের বাজারে কোনও বাদুড় বিক্রি হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে এই ভাইরাসের মূল উত্স কী? এখন তারই সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy