আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের (আইএমএফ) পর এ বার পাকিস্তানের সাহায্যার্থে এগিয়ে এল এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি)। পাকিস্তানের জন্য ছ’হাজার কোটি টাকার (৮০ কোটি ডলার) ঋণ মঞ্জুর করেছে তারা। সূত্রের খবর, পাকিস্তানের এই ঋণের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছিল ভারত। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব জোরদার করা এবং সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করার জন্য এই ঋণ মঞ্জুর করেছে এডিবি। পাক বিদেশমন্ত্রীর পরামর্শদাতা খুররম শেহজ়াদ সমাজমাধ্যমে এই খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ৮০ কোটি ডলারের প্যাকেজের মধ্যে ৩০ কোটি ডলার ‘নীতি ভিত্তিক’ (পলিসি বেস্ড লোন বা পিবিএল) এবং বাকি ৫০ কোটি ডলার ‘প্রোগ্রাম ভিত্তিক’ (প্রোগ্রাম বেস্ড গ্যারান্টি বা পিবিজি)। এডিবি-র সম্পদ সংগ্রহ সংস্কার কর্মসূচি (রিসোর্স মোবিলাইজ়েশন রিফর্ম প্রোগ্রাম)-এর অধীনে এই ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
এডিবি একটি আঞ্চলিক উন্নয়নমূলক ব্যাঙ্ক, যা এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করে। এর সদর দফতর রয়েছে ফিলিপিন্সে। এ ছাড়া বিশ্বের নানা প্রান্তে এডিবি-র মোট ৩১টি দফতর রয়েছে। এডিবি-র পাকিস্তানের ডিরেক্টর এমা ফান বলেছেন, ‘‘অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে পাকিস্তান সামগ্রিক ভাবে উন্নতি করেছে। পাক সরকারের নীতিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করে এডিবি-র কর্মসূচি। তাই এই ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে।’’ পাকিস্তানকে এডিবি-র এই অর্থসাহায্য সে দেশের শুল্ক ব্যবস্থার উন্নতি, রাজস্ব বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতাকে ত্বরান্বিত করবে বলে মত অনেকের।
এর আগে পাকিস্তানের জন্য সাড়ে আট হাজার কোটির ঋণ মঞ্জুর করেছিল আইএমএফ। ইতিমধ্যে যার প্রথম এবং দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ইসলামাবাদে পৌঁছে গিয়েছে। পহেলগাঁয়ে জঙ্গি হামলা এবং পাকিস্তানে ভারতের সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরবর্তী সময়ে দুই দেশের সংঘাতের আবহে আইএমএফ-এর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছিল। যা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। ভারত বরাবরই পাকিস্তানকে এই ধরনের আর্থিক সাহায্যের বিরুদ্ধে। নয়াদিল্লির বক্তব্য, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সাহায্যের টাকা দেশের উন্নয়নের কাজে না লাগিয়ে সামরিক খাতে ব্যয় করবে। আইএমএফ-এর ঋণের ক্ষেত্রেও ওই প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। সূত্রের খবর, পাকিস্তানকে এডিবি-র ঋণের ক্ষেত্রেও ‘অপব্যবহারের’ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় নয়াদিল্লির তরফে। পাক অর্থনীতির দুর্বলতাও তুলে ধরা হয়। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালে পাকিস্তানের শুল্ক থেকে সংগৃহীত রাজস্ব ছিল জিডিপির ১৩ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কমে হয়েছে জিডিপির ৯.২ শতাংশ। তবে এডিবি-র ঋণ পাচ্ছে পাকিস্তান।