E-Paper

বাজার থেকে কোভিড-টিকা তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের কাছে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার দাবি, তারা ‘বাণিজ্যিক কারণে’ প্রতিষেধকটি বাজার থেকে তুলে নিচ্ছে। তাদের ব্যাখ্যা, করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্টকে কাবু করার জন্য বাজারে আরও কার্যকর টিকা চলে এসেছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৪ ০৮:৩৭

—প্রতীকী চিত্র।

অ্যাস্ট্র্যাজ়েনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে তৈরি কোভিড-প্রতিষেধকের যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, তা স্বীকার করে নেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মাথায় ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থাটি গত কাল ঘোষণা করেছে, তারা গোটা বিশ্বের বাজার থেকে তাদের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা ‘এজ়েডডি১২২২’ তুলে নিচ্ছে। অ্যাস্ট্র্যাজ়েনেকার তৈরি এই প্রতিষেধকটিই ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ‘কোভিশিল্ড’ নামে তৈরি করেছিল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের কাছে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার দাবি, তারা ‘বাণিজ্যিক কারণে’ প্রতিষেধকটি বাজার থেকে তুলে নিচ্ছে। তাদের ব্যাখ্যা, করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্টকে কাবু করার জন্য বাজারে আরও কার্যকর টিকা চলে এসেছে। ‘এজ়েডডি১২২২’ আর উৎপাদন করা হবে না, বাজারে সরবরাহ করাও হবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনও দেশে প্রতিষেধকটি আর পাওয়া যাবে না। প্রতিষেধক বাজার থেকে প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছিল ৫ মার্চ। গত কাল সেটি চূড়ান্ত হল।
অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। অভিযোগ, তাদের তৈরি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে। তা ছাড়া ‘থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিন্ড্রোম’ (টিটিএস) হয়েছে বহু মানুষের। এর জেরে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া, রক্তে অণুচক্রিকা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে।

২০২০ সালে পৃথিবী জুড়ে যখন নভেল করোনাভাইরাসের তাণ্ডব চলছে, সে সময়ে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় একজোটে ‘এজ়েডডি১২২২’ প্রতিষেধকটি তৈরি করে। ভারত ও অন্যান্য নিম্ন-মধ্যবিত্ত দেশে বিতরণ করা হয় সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি ‘কোভিশিল্ড’। অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা সেই লাইসেন্স দিয়েছিল সিরামকে। ভারতে তৈরি টিকা পাঠানো হয়েছিল আফ্রিকা, এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে। মামলা চলাকালীন গত ফেব্রুয়ারি মাসে চাপের মুখে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা স্বীকার করে, তাদের প্রতিষেধকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তারা বলে, ‘‘আশঙ্কা খুব কম, কিন্তু টিটিএস হতে পারে।’’

মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘‘প্রতিষেধকটিতে ত্রুটি রয়েছে। অতীতে এর কার্যকারিতা সম্পর্কে বাড়িয়ে বলা হয়েছিল।’’

এ পর্যন্ত ৫১টি মামলা দায়ের হয়েছে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার বিরুদ্ধে। ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন অভিযোগকারীরা, যার মোট অঙ্ক ১০ কোটি পাউন্ডেরও বেশি। আইনি সংস্থা ‘লে ডে’-এর অংশীদার সারা মুরের কথায়, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক হল, অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা, সরকার ও তাদের আইনজীবীরা চেষ্টা করছেন কৌশলগত ভাবে খেলতে। তাঁরা মামলায় খরচ করতে রাজি। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের জীবনে যে ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে, সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে নারাজ।’’

অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তরফে বলা হয়েছে, ‘‘যাঁদের শারীরিক ক্ষতি হয়েছে, যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের সহানভূতি রয়েছে। রোগীদের নিরাপত্তা আমাদের কাছে সব সময় প্রাধান্য পেয়েছে। ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা, যাঁরা প্রতিষেধকটিকে বাজারে ছাড়তে অনুমোদন করেছিল, তারা সব সময়ই সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে চলে। সেটা ওষুধ কিংবা প্রতিষেধক, সব ক্ষেত্রেই।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Covid Vaccines Astrazeneca

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy