ঢাকায় ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে ‘আয়নাঘর’ রহস্য অবশেষে মিটল! ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনের পাশে নির্মীয়মাণ একটি ভবনে জলমগ্ন বেসমেন্টের হদিস পাওয়া যায়। তা নিয়ে কৌতূহলী জনতার অনেকেই সন্দেহ করতে থাকেন, সেখানে নাকি ‘আয়নাঘর’ রয়েছে। তা চাউর হতে বেশি দেরি হয়নি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও রবিবার সকালে ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে পৌঁছে যায় দমকল বাহিনী। নির্মীয়মাণ ভবনের বেসমেন্ট থেকে জল বার করেন তাঁরা। কিন্তু বিশেষ কিছুই পাওয়া যায়নি ওই বেসমেন্ট থেকে।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ সেখানে পৌঁছয় দমকল বাহিনী। পাম্পের সাহায্যে নির্মীয়মাণ ভবনটির ভূগর্ভস্থ তলে জমা জল বার করেন তাঁরা। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, দমকলের তিনটি ইউনিট জল বের করা শুরু করেছে। ঢাকার মোহাম্মদপুরে দমকল অফিসের আধিকারিক আফনান ইসলাম লিমন জানান, তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই জল বার করার জন্য। এর বেশি তাঁরা কিছু জানেন না। বিকেলে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি বাংলা’ জানায়, জল বের করার পর সেখানে বিশেষ কিছুই পাননি দমকলকর্মীরা। দমকল অফিসের স্টেশন অফিসার মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে ‘বিবিসি বাংলা’ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, জল বের করার পর ‘আয়নাঘর’ বা তেমন কিছুর সন্ধান মেলেনি। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে তাঁরা ওই বেসমেন্ট থেকে জল বার করেন। তিনি বলেন, “আমরা পাম্পের মাধ্যমে জল পাশের জলাশয়ে ফেলে পুরোপুরি বার করি। তবে সেখানে আমরা কিছু পাইনি। এরপর আমরা সেখান থেকে চলে এসেছি।”
আরও পড়ুন:
‘আয়নাঘর’ হল বাংলাদেশের গোপন বন্দিশালা। হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সে দেশে প্রচুর গুমখুনের অভিযোগ উঠেছে। শোনা যেত, সরকারের একটি গোপন বন্দিশালা রয়েছে, যার নাম আয়নাঘর। সেখানে দিনের পর দিন বিনা বিচারে অভিযুক্তদের আটকে রাখা হত বলে অভিযোগ। এমনকি, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেও ঠাঁই হত গোপন ওই বন্দিশালায়। অভিযোগ, সরকারের নির্দেশে বাংলাদেশ পুলিশ খুন, গুমখুন বা অপহরণ করে আয়নাঘরে বন্দি করে রাখার মতো কাজ করেছে একাধিক বার। অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে ‘আয়নাঘর’-এর অস্তিত্বের কথা স্বীকার করেছে।
এরই মধ্যে গত বুধ এবং বৃহস্পতিবার ঢাকায় ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে তাণ্ডব চালান এক দল জনতা। ভাঙচুর হয় ৩২ নম্বর ধানমন্ডির সীমানার মধ্যেই থাকা একটি নির্মীয়মাণ ভবনও। নির্মীয়মাণ ওই ভবনে তাঁরা একটি বেসমেন্টের খোঁজ পান। সেটি সম্পূর্ণ ভাবে জলে নিমজ্জিত। ভেঙে গুঁড়িয়ে যাওয়া মুজিবের বাসভবন দেখতে আসা জনতাদের মনে ওই বেসমেন্ট ঘিরে কৌতূহল দানা বাঁধতে শুরু করে। ভিড় জমতে থাকে নির্মীয়মাণ ওই ভবনের বেসমেন্টের কাছেও।