প্রতীকী ছবি।
বছর পাঁচেক ধরেই চেষ্টা চলছিল। শেষ পর্যন্ত ভুটানকে বাইরে রেখেই ভারত, বাংলাদেশ এবং নেপাল নিজেদের মধ্যে অবাধে যানবাহন চলাচলের চুক্তিকে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিল।
প্রাথমিক ভাবে ২০১৫ সালে এই তিনটি দেশের সঙ্গে ভুটানও সই করেছিল চর্তুদেশীয় বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত এবং নেপাল) যোগাযোগ সংক্রান্ত এই চুক্তিতে। কিন্তু পাঁচ বছরেও ভুটান এটিকে কার্যকর করার প্রশ্নে দ্বিধা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে বিস্তর কূটনৈতিক দৌত্য হয়েছে ভারত ও ভুটানের নেতৃত্বের মধ্যে। কিন্তু ফলাফল কিছু না হওয়ায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, আপাতত এগিয়ে যাওয়া হবে ত্রিদেশীয় পর্যায়ে। শনিবার এই তিন দেশের সংশ্লিষ্ট নেতৃত্ব নয়াদিল্লিতে বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। স্থির হয়েছে, যাত্রী এবং পণ্য চলাচলের জন্য পরিকাঠামো তৈরির কাজ দ্রুত শুরু হবে।
এই চুক্তির মাধ্যমে ঢাকা থেকে পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ি যেমন অবাধে ভারতে আসবে, আবার ভারত হয়ে নেপালেও যেতে পারবে। তিন দেশই পরস্পরের সড়কপথ ব্যবহার করতে পারবে নির্দিষ্ট প্রোটোকলের মাধ্যমে। এর আগেই পরীক্ষামূলক ভাবে কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে ত্রিপুরার আগরতলায় গিয়েছে মালবাহী ট্রাক। পোশাকবাহী দু’টি ট্রাক ঢাকা থেকে কলকাতা হয়ে দিল্লিও এসেছে।
ভুটান কেন রাজি হচ্ছে না, তা নিয়ে চলছে কূটনৈতিক চর্চা। বিষয়টিকে নয়াদিল্লির ব্যর্থতা বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। ভুটানের লোটে শেরিং সরকারের সঙ্গে মোদী সরকারের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এই ঘটনা কিছুটা ছন্দপতনের ইঙ্গিত
বলেও মনে করা হচ্ছে। ভারত চিন এবং ভুটানের ত্রিদেশীয় সীমান্তে ডোকলাম সংঘাতের পর নয়াদিল্লি-থিম্পু সম্পর্ক আতসকাঁচের নীচে চলে আসে। চিনের উপর ভুটানের কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক নির্ভরতা বৃদ্ধির বিষয়টিও উদ্বেগে রেখেছে সাউথ ব্লককে। চিনের নেতৃত্বে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য সংযোগ প্রকল্পগুলিকে প্রাধান্য দিতে ভুটানকে কতটা প্রভাবিত করছে বেজিং, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।
ভুটানের তরফ থেকে অবশ্য এই বিবিআইএন প্রকল্পটিতে যোগ না-দেওয়ার কারণ হিসাবে দেখানো হচ্ছে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ঐকমত্যের অভাব। অন্য দেশের গাড়ি ভুটানে চলাচল করলে সে দেশের পরিবেশ নষ্ট হতে পারে, এই যুক্তিতেই সে দেশের সংসদে বিবিআইএন চুক্তি রূপায়ণ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy