জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের উপরে চাপ বজায় রাখছে বিএনপি। আজ তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে, যে বা যারা নির্বাচন পিছতে চায়, তারা গণতন্ত্রের সমর্থক নয়। তারা জুলাই আন্দোলনের চেতনার বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশে ক্ষমতা বদলের পর থেকে চলতি বছরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে কার্যত অনড় ছিল বিএনপি। কিন্তু ব্রিটেনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পরে ঘোষণা করা হয়, ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর পর থেকে বিএনপি নেতারা তেমন ভাবে আর নির্বাচনের দাবি তুলেছিলেন না। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই যে দিকে যাচ্ছে, তাতে কয়েকটি মহল থেকে বলা হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কী ভাবে সম্ভব! তার প্রেক্ষিতে আজ ঢাকার গুলশনে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “মানুষ অবিলম্বে নির্বাচন চান। আমরা আগেও বলেছি, আবারও বলছি—যারা নির্বাচন পিছতে চায়, তারা কোনও ভাবেই গণতান্ত্রিক শক্তি হতে পারে না, তারা জুলাই-অগস্ট বিপ্লবেরও সমর্থক নয়।” তিনি জানান, লন্ডনে প্রধানউপদেষ্টা এবং তারেক রহমানের যে আলোচনা হয়েছে, বিএনপি মনে করে তার ভিত্তিতে দেশে নির্বাচনেরপথ তৈরি হবে।
বিএনপি- মহাসচিবের অভিযোগ, কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিএনপি-কে জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে জন-মনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে চায়। কিন্তু জনগণ এর প্রতি সাড়া দিচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘বিএনপি একটি পরীক্ষিত উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়েই জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চাই। বিপ্লব বা অন্য কোনো পন্থায় আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না।’’
কিছুটা আক্ষেপের সুরেই ফখরুল আলমগীর বলেছেন, ‘‘কিছু গণমাধ্যম ও ব্যক্তি বিএনপি-র সংস্কার সংক্রান্ত অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন। অথচ ২০১৬ সাল থেকেই বিএনপি সংস্কার নিয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এরপরও একটি গোষ্ঠী উদ্দেশ্যমূলক ভাবে বিএনপিকে সংস্কার-বিরোধী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। এটি একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার।’’
নির্বাচন কেন জরুরি সে কথা বলতে গিয়ে ফখরুল বলেন, ‘‘ব্যক্তিকেন্দ্রিক বা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক অতিরিক্ত ক্ষমতা যেমন ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি করে, তেমনি নির্বাচিত সরকার ও সংসদের ক্ষমতা খর্ব করাও রাষ্ট্রকে অকার্যকর করে তোলে।’’ তাঁর আবেদন, দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এই পরিবর্তনের সুযোগকে ইতিবাচক ভাবে কাজে লাগাতে হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)