৩০ দিনের সময়সীমা শেষ! তার পরই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, কানাডা, মেক্সিকো এবং চিনের উপর পূর্বনির্ধারিত শুল্কনীতিই আরোপ করবেন। মঙ্গলবার থেকেই তা কার্যকর হবে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর একে একে জবাব দিতে শুরু করেছে কানাডা, মেক্সিকো এবং চিন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, মার্কিন পণ্যের উপর ‘প্রতিশোধমূলক’ শুল্ক আরোপ করা হবে। শুধু কানাডা নয়, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের পথে মেক্সিকোও। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেনবাম জানান, আমেরিকা কী করে, তার অপেক্ষায় আছেন। বিকল্প পথও প্রস্তুত!
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, ট্রুডো জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যদি শুল্কনীতি নিয়ে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, তবে তাঁরাও উচ্চ শুল্ক আরোপ করবে। ১০৭ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা) মূল্যের মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক চাপানো হবে। মঙ্গলবার থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা) মার্কিন পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। ২১ দিন পর দ্বিতীয় বার বাকি মূল্যের পণ্যের উপর বাড়তি শুল্ক চাপাবে কানাডা। আমেরিকা প্রশাসন শুল্কনীতি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত মার্কিন পণ্যের উপর আরোপ করা শুল্ক বহাল থাকবে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্টের শুল্কনীতি ঘিরে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে আসা পণ্যের উপর আমেরিকায় ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছেন ট্রাম্প। একই রকম ভাবে চিনা পণ্যের উপরেও আমেরিকায় ১০ শতাংশ শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) মধ্যরাত থেকেই নতুন হারে শুল্ক কার্যকর করা হবে বলে জানায় ট্রাম্প প্রশাসন।
শুধু কানাডা নয়, মেক্সিকোও আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি শুল্কযুদ্ধে নামার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে। সে দেশের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমেরিকা যদি আমাদের পণ্যে শুল্ক চাপায়, তবে আমরাও তা প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত। আমাদের প্ল্যান বি, সি, ডি তৈরিই আছে।’’ তবে কত শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে, তা এখনই নিশ্চিত করে জানানো হয়নি মেক্সিকোর তরফে।
আরও পড়ুন:
কানাডার উপর ট্রাম্পের শুল্ক চাপানোর নেপথ্যে অন্যতম বড় কারণ ছিল ফেন্টানাইল। এই মাদকটি ব্যথার উপশমের ক্ষেত্রে মরফিনের তুলনায় বহু গুণ শক্তিশালী। ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, কানাডা হয়ে এই মাদক আমেরিকায় প্রবেশ করছে। ট্রুডো যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, আমেরিকায় যত ফেন্টানাইল রয়েছে, তার মাত্র এক শতাংশই কানাডা থেকে গিয়েছে। ফেন্টানাইল নিয়ে ট্রুডো এবং ট্রাম্পের কথাও হয়েছিল। তার পরই এক মাসের জন্য কানাডার উপর জারি করা নয়া শুল্কনীতি স্থগিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। শুধু কানাডা নয়, মেক্সিকোর জন্যও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে মঙ্গলবার থেকে পুরনো ঘোষণা মতোই কানাডা এবং মেক্সিকোর সঙ্গে শুল্কযুদ্ধ শুরু করলেন ট্রাম্প। তাঁর ঘোষণার পরই প্রভাব পড়ল ভারতের শেয়ার বাজারে। শুধু ভারত নয়, বিশ্বব্যাপীও প্রভাব লক্ষ করা গিয়েছে।