আশঙ্কার কথা বছর আড়াই আগেই জানিয়েছিল আমেরিকা। তা সত্যি প্রমাণিত করে এ বার প্রশান্ত মহাসাগরে জাপানের অর্থনৈতিক জলসীমার (ইইজেড) অন্দরে দেখা গেল চিনা নৌবহরের তৎপরতা। সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রথম বার!
জাপানের প্রতিরক্ষা দফতর মঙ্গলবার জানিয়েছে, সোমবার বিকেলে চিনা ‘পিপল্স লিবারেশন নেভি’র বিমানবাহী রণতরী শানদং এবং আরও চারটি যুদ্ধজাহাজ প্রশান্ত মহাসাগরের ওকিনোটোরি প্রবালদ্বীপের কাছে জাপানের অর্থনৈতিক জলসীমার মধ্যে প্রবেশ করেছে। যার মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজও রয়েছে। চিনা বিমানবাহী রণতরী থেকে যুদ্ধবিমান এবং হেলিকপ্টারের ধারাবাহিক ওঠানামাও নজরে এসেছে জাপানের সেনার।
জাপান এবং তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চিনা ফৌজ ক্রমশ আগ্রাসী হয়ে উঠবে বলে ২০২৩ সালের গোড়ায় একটি রিপোর্টে জানিয়েছিল পেন্টাগন। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মিত্র দেশগুলিকে বেজিঙের নিশানা থেকে রক্ষা করতে একটি ‘ক্ষেপণাস্ত্র প্রাচীর’ গড়ার কথাও বলা হয়েছিল আড়াই বছর আগেকার ওই রিপোর্টে। মাসকয়েক আগে চিনের আর এক বিমানবাহী রণতরী লিয়াওনিং একই ভাবে জাপানের ইইজেড-এ অনুপ্রবেশ করেছিল। কিন্তু সামান্য সময় কাটিয়েই সেটি ফিরে যায়।
কিন্তু এ বার পাঁচ যুদ্ধজাহাজের বহর নিয়ে পুরোদস্তুর মহড়া শুরু করেছে চিনা নৌসেনা। অন্য দিকে, লিয়াওনিং নামে চিনা বিমনবাহী যুদ্ধজাহাজটি রয়েছে জাপানের জলসীমার অদূরেই। মিনামিটোরিশিমা নামে প্রত্যন্ত দ্বীপের কাছে। জাপান প্রতিরক্ষা দফতরের মুখপাত্র হায়াশির অভিযোগ, চিনের উপকূল থেকে বহু দূরে লালফৌজের এই নৌমহড়া সমুদ্রপথে আগ্রাসী আচরণের ইঙ্গিতবাহী। যদিও চিনা বিদেশ দফতরের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক বিধি মেনেই এই নৌমহড়া হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিঙের আগ্রাসন রুখতে গত বছর অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ফিলিপিন্সকে নিয়ে নতুন সামরিক জোট ‘স্কোয়াড’ গড়েছে আমেরিকা। তাতে শামিল হওয়ার জন্য বার্তা দেওয়া হয়েছে ভারত এবং দক্ষিণ কোরিয়াকেও। এর আগে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেজিঙের আধিপত্য রুখতে আমেরিকার নেতৃত্বে ২০০৭ সালে ‘কোয়াড’ (কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ) গঠিত হয়েছিল। ওই সামরিক জোটের সদস্য ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপান। এই পরিস্থিতিতে টোকিয়োকে চাপে ফেলতেই বেজিঙের এই অর্থনৈতিক জলসীমা লঙ্ঘনের কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।