ছবি রয়টার্স।
লকডাউনে কাজকর্ম বন্ধ থাকলে মুখ থুবড়ে পড়বে অর্থনীতি, কাজ হারাবেন অজস্র গরিব মানুষ। আবার হু হু করে বাড়তে থাকা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখতে লকডাউন ছাড়া গতিও নেই। এই দোলাচলে ভারসাম্য রাখার মরিয়া চেষ্টা করা বাংলাদেশ সরকার সোমবার তাদের ঘোষিত ‘সাধারণ ছুটি’-র মেয়াদ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে ১০ মে থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত শপিং মল ও দোকানপাট, এবং দূরত্ব বিধি মানার শর্তে অফিস আদালত ‘কাজ চলার মতো’ খোলা রাখার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আপাতত হাসিনা সরকারের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ মাসের শেষ দিকে পড়া ইদ। মুসলিম-প্রধান এই দেশের প্রধান উৎসব ইদকে কেন্দ্র করে বহু কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য দেশের অজস্র পরিবারকে সারা বছর খাবার জোটায়। মূলত ইদের কেনাকাটার সুযোগ মানুষকে দিতেই মল-দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত। গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই ধাপে ধাপে তৈরি পোশাক বা গার্মেন্টস কারখানাগুলি অল্প শ্রমিক নিয়ে খোলার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু তাতে শ্রমিকদের ভিড় এড়ানো যায়নি। ১৮টি মন্ত্রকের অধীনে সরকারি দফতরগুলি খুলে দেওয়ার কয়েক দিন পরেই ফের বন্ধ করে দিতে হয়েছে মানুষের লকডাউন ভাঙার বহর দেখে।
সরকার জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু করলেও সংক্রমণ কমার বিন্দুমাত্র লক্ষণ নেই। বরং তা পুরোদমে ছড়িয়ে চলেছে। সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬৮৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ায় বাংলাদেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০,১৪৩ জনে। এক দিনে এত বেশি নতুন রোগী বাংলাদেশে আগে শনাক্ত হয়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫ জন মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮২ জন।
এক দিকে সরকারি সিদ্ধান্তে প্রয়োজনের চেয়ে কম মানুষের করোনা-পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে, আবার যথেষ্ট সুরক্ষা-কিটের অভাবে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে দিনরাত এক করে লড়াই চালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশের মধ্যে। সরকার লকডাউন-এর বদলে ‘সাধারণ ছুটি’ নাম দেওয়ারও সমালোচনা করছেন অনেকে। তাঁদের যুক্তি, মানুষের একটা বড় অংশ লকডাউনের গুরুত্ব না-বুঝে ছুটির মেজাজে রয়েছেন। ইদের ছুটিতে তা মাত্রা ছাড়িয়ে বিপদ ডেকে আনতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে সরকার ইতিমধ্যেই জরুরিকালীন পরিষেবায় যুক্ত এবং সরকারি কর্মচারীদের জানিয়েছেন, ইদের ছুটিতে কর্মস্থল ছেড়ে যাওয়া চলবে না।
আরও পড়ুন: চিনের বিরুদ্ধে প্রমাণ আছে, সরব পম্পেয়ো
সব মিলিয়ে জীবন বনাম জীবিকার দ্বন্দ্বে জেরবার বাংলাদেশ। সংক্রমণ ছড়িয়ে চলেছে তার সুযোগ নিয়ে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy