পাশাপাশি রাখা দু’টি চেয়ারে তাঁরা বসে আছেন। পরস্পরের মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলছেন। বিশেষ কোনও কথা বলার জন্য এক জন আবার অপরের দিকে খানিকটা ঝুঁকেও গেলেন। দু’জনেই শান্ত, স্বচ্ছন্দ, নিরুদ্বেগ। তবে কি পুনর্মিলন হয়ে গেল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মার্কিন ধনকুবের তথা টেসলা সিইও ইলন মাস্কের? রবিবারের ছবি এবং ভিডিয়ো দেখে তেমন জল্পনাই জোরালো হচ্ছে।
রবিবার আমেরিকার অ্যারিজ়োনা প্রদেশের গ্লেনডালে স্টেডিয়ামে দক্ষিণপন্থী নেতা চার্লি কির্কের স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই একসঙ্গে দেখা গিয়েছে ট্রাম্প এবং মাস্ককে। একসময় তাঁরা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস আগে ‘বিচ্ছেদ’ ঘটে। তার পর প্রকাশ্যেই একে অপরের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছিলেন ট্রাম্প এবং মাস্ক। ব্যক্তিগত কাদা ছোড়াছুটিও বাদ ছিল না। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মাস্ক নতুন দলও গঠন করে ফেলেন। নির্বাচনে লড়ার হুমকি দেন। গত জুন মাসে এই সংক্রান্ত বিতর্ক চরমে পৌঁছেছিল। তার পর এই প্রথম একসঙ্গে তাঁদের প্রকাশ্যে দেখা গেল।
আড্ডায় মজে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইলন মাস্ক। ছবি: এক্স।
হোয়াইট হাউসের তরফে এক্স হ্যান্ডলে ট্রাম্প এবং মাস্কের একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। সাদাকালো সেই ছবিতে দু’জনকে ঘনিষ্ঠ ভাবে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে। তবে ছবিটি পিছন দিক থেকে তোলা। ফলে তাঁদের মুখ দেখা যাচ্ছে না। এই ছবির সঙ্গে দু’টি শব্দ লেখা হয়েছে শুধু— ‘চার্লির জন্য’। মাস্ক নিজেও সমাজমাধ্যমে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বার্তালাপের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সঙ্গে লিখেছেন সেই দু’টি শব্দ— ‘চার্লির জন্য’।
আরও পড়ুন:
সমাজমাধ্যমে দু’জনের কথাবার্তার আরও কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, মাস্ক চেয়ার ছেড়ে ওঠার আগে ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন এবং আলতো ভাবে তাঁর পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের কুর্সিতে বসার আগে তাঁর হয়ে ঢালাও প্রচার করেছিলেন মাস্ক। প্রচুর অর্থও দিয়েছিলেন প্রচারের কাজে। নির্বাচনে জেতার পর ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে মাস্কের জন্য আলাদা একটি দফতর খুলে দেন। তাঁকে সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতর (ডিওজিই)-এর প্রধান হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। বেশ কিছু দিন দফতরে কাজ করেন মাস্ক। কিন্তু ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে একটা সময়ের পর আর তিনি একমত হতে পারেননি। ফলে বিচ্ছেদ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। মাস্ক পদত্যাগ করেন এবং প্রকাশ্যে প্রেসি়ডেন্টের সমালোচনা শুরু করেন। তার পর ট্রাম্পও চুপ করে থাকেননি। দু’জনের সেই তিক্ততার রেশ আপাতত কেটেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
দক্ষিণপন্থী নেতা কির্ক ট্রাম্পের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশ্য সভায় তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়। তাঁর মৃত্যুশোক ট্রাম্প এবং মাস্ককে পুনরায় কাছাকাছি আনল।