Advertisement
E-Paper

মাটির গভীরে গিয়ে ‘লক্ষ্যভেদ’! ইরানে ‘সফল হামলার’ প্রশংসায় আবার পঞ্চমুখ ট্রাম্প, বললেন, মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে

রবিবার ইরানের অন্তত তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালায় আমেরিকা। হামলার পরেই ট্রাম্প জানান, ইরানের ফোরডো, নাতান্‌জ় ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে ‘সফল’ হামলা চালিয়েছে আমেরিকার সেনাবাহিনী। তার পর থেকে বার বারই একই দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫ ০৯:৫৭
ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। — ফাইল চিত্র।

ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে স্থানীয় সময় অনুযায়ী শনিবার গভীর রাতে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। নিশানায় ছিল ইরানের ফোরডো, নাতান্‌জ় ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পরমাণুকেন্দ্র। হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই জানান, ইরানের ওই তিন পরমাণুকেন্দ্রে ‘সফল’ হামলা চালিয়েছে আমেরিকার সেনাবাহিনী। বরং ইরানের তরফে বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, এমন দাবি করা হলেও বার বারই তা নস্যাৎ করে দিয়েছেন ট্রাম্প।

সোমবার ভোরে ট্রাম্প তাঁর সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুকেন্দ্রগুলিতে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপগ্রহচিত্রেও তা স্পষ্ট। মাটির গভীরে গিয়ে ‘লক্ষ্যভেদ’ করেছে মার্কিন বাহিনী! এর আগে এই নজির আর কারও নেই।’’ রবিবার রাতেও ‘ট্রুথ’-এ আমেরিকার এই অভিযানের কথা লিখেছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি, ট্রাম্প এও জানিয়েছেন যে, এই হামলার পর ইরানের হাতে আর বোমা নেই। আমেরিকান সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি লেখেন, “অন্য কোনও দেশের সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত এই ধরনের অভিযান চালাতে পারেনি।” শুধু তা-ই নয়, সমাজমাধ্যমে শান্তির বার্তাও দিতে দেখা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।

ইরানে মার্কিন হামলার পরেই ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিন কেন্দ্রই ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ হয়ে গিয়েছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই দাবির সপক্ষে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ মেলেনি। আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের আধিকারিকেরা রবিবার সকালে (আমেরিকার স্থানীয় সময় অনুযায়ী) জানিয়েছেন, তিন পরমাণুকেন্দ্রেরই বড় ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ঠিক কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা বুঝতে আরও সময় লাগবে। যদিও ইরান পাল্টা দাবি করেছে, আমেরিকা হামলা চালালেও তিন পরমাণুকেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। ফলে নাগরিকদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। ঘটনাচক্রে, আমেরিকার হামলার ঠিক আগেই কিছু তৎপরতা লক্ষ করা গিয়েছিল ফোরডোতে। উপগ্রহচিত্রে দেখা গিয়েছে, পরমাণুকেন্দ্রটির যে জায়গায় সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, সেই রাস্তায় গত ১৯ জুন ১৬টি মালবাহী ট্রাক এবং বুলডোজ়ার দেখা গিয়েছিল। ২০ তারিখের উপগ্রহচিত্রে দেখা যায়, সেগুলি উত্তর-পশ্চিম দিকে আরও এক কিলোমিটার মতো সরে গিয়েছে। এর পরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, আমেরিকা হামলা চালাতে পারে ভেবেই কি পরমাণু প্রকল্পের জন্য জরুরি সরঞ্জাম সরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল ইরান? কিন্তু সে সব জল্পনা উড়িয়ে দিতে তৎপরতার সঙ্গে মাঠে নেমে পড়েছেন ট্রাম্প। তাই রবিবার থেকেই একের পর এক পোস্টে ইরানে ‘সফল’ হামলার প্রশংসা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে।

যদিও ট্রাম্পের দাবির সপক্ষে নির্ভুল তথ্যপ্রমাণ না থাকলেও উপগ্রহচিত্রও তেমনটাই বলছে। ‘প্ল্যানেট ল্যাবস পিবিসি’-র প্রকাশিত একটি উপগ্রহচিত্র বিশ্লেষণ করে অনুমান করা হচ্ছে, ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রের একাধিক প্রবেশপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসফাহান পরমাণুকেন্দ্রে হামলার একটি ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডলে প্রকাশ করেছেন মাইকেল উলরিচ নামে এক ব্যবহারকারী। মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ পরে জানিয়েছে, তারা ভিডিয়োটি যাচাই করেছে। ৩৭ সেকেন্ডের ভিডিয়োটিতে ইসফাহান পরমাণুকেন্দ্রের চত্বরে বিস্ফোরণের রক্তিম ঝলকানি দেখা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, বিস্ফোরণটি পরমাণুকেন্দ্রের সুড়ঙ্গপথের ঠিক মুখেই হয়েছে। কিন্তু বিস্ফোরণে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

তবে ক্ষয়ক্ষতির চিত্রটা এখনও স্পষ্ট না হলেও, একে আমেরিকা এবং ইজ়রায়েলের জন্য ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলেই আখ্যা দিচ্ছেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ-ও বলে রেখেছেন, এর পরেও যদি ইরান আলোচনার টেবিলে না বসে, ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ হামলা চালানো হবে। সোমবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প।

Iran Isreal conflict Donald Trump US Ayatollah Ali Khamenei israel Iran
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy