দক্ষিণ আফ্রিকার জি২০ সম্মেলন সম্পূর্ণ বয়কট করছে আমেরিকা। সে দেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজে তো যাবেনই না, আমেরিকা থেকে কোনও প্রতিনিধিকেও পাঠাবেন না দক্ষিণ আফ্রিকায়। চলতি মাসের ২২ এবং ২৩ তারিখ সেখানে জি২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক বরাবরই কিছুটা তিক্ত। সে দেশে শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে আসছে আমেরিকা। ট্রাম্পের ক্ষোভও সেই কারণেই। শুক্রবার রাতে (স্থানীয় সময়) তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকায় জি২০ সম্মেলন হচ্ছে, এটা অসম্মানজনক। সেখানে শ্বেতাঙ্গদের খুন করা হচ্ছে, তাঁদের জমি-জায়গা বেআইনি ভাবে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই মানবাধিকার লঙ্ঘন যত দিন চলবে, আমেরিকার কোনও সরকারি আধিকারিক ওই দেশে যাবেন না।’’ ২০২৬ সালে ফ্লরিডার মায়ামি শহরে জি২০ সম্মেলনের আয়োজন করতে চলেছে আমেরিকা। তার জন্য মুখিয়ে আছেন, জানিয়েছেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন:
দক্ষিণ আফ্রিকায় মূলত ডাচ, ফরাসি এবং জার্মান বংশোদ্ভূতদের উপর অত্যাচারের কথা উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। অভিযোগ, বর্ণবৈষম্যের কারণে নির্বিচারে শ্বেতাঙ্গদের হত্যা করা হয় ওই দেশে। শ্বেতাঙ্গ কৃষকেরা সেখানে সংখ্যালঘু। তাই তাঁদের উপর অত্যাচার চলে। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার এই ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে ট্রাম্প প্রশাসন এ-ও জানিয়েছিল, শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে এ বার থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গদের তারা অগ্রাধিকার দেবে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরে আমেরিকায় শরণার্থীদের অনুপ্রবেশ কমে গিয়েছে। বছরে সাড়ে সাত হাজারের বেশি শরণার্থীকে সরকারি ভাবে আমেরিকায় প্রবেশাধিকার দেওয়া হয় না। সেই সাড়ে সাত হাজারেই দক্ষিণ আফ্রিকান শ্বেতাঙ্গেরা অগ্রাধিকার পাবেন বলে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের দাবি, সে দেশে কৃষ্ণাঙ্গ এবং শ্বেতাঙ্গেরা সমানাধিকার ভোগ করেন। উভয়ের জীবনযাত্রার মানই উচ্চ। ট্রাম্পের অভিযোগকে ভুয়ো বলে উল্লেখ করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা।
জি২০ বৈঠকে যোগ দিতে ট্রাম্প যে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাচ্ছেন না, তা কিছু দিন আগেই জানা গিয়েছিল। তবে মনে করা হয়েছিল, পরিবর্তে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স এ বছরের জি২০ বৈঠকে হোয়াইট হাউসের প্রতিনিধিত্ব করবেন। সংবাদসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, ভান্সের তেমন কোনও পরিকল্পনা নেই। তা ছাড়া, দক্ষিণ আফ্রিকাকে জি২০ থেকে বরখাস্ত করার সুপারিশও একাধিক বার করেছেন ট্রাম্প।