দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেই কানাডা দখলের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বার সরাসরি কানাডাকে আমেরিকার অংশ হওয়ার প্রস্তাব দিলেন তিনি। তাঁর প্রস্তাব, যদি কানাডা আমেরিকার ৫১তম প্রদেশ হয়, তবে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় (এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম) ‘সোনালি সুরক্ষা’ (গোল্ডেন ডোম) পাবে বিনামূল্যে!
জানুয়ারিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার পরেই ট্রাম্প ঘোষণা করেন, তিনি কানাডা, গ্রিনল্যান্ড দখল করবেন! বিশেষ করে সীমান্তবর্তী কানাডার উপরই নজর ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টের। এ বার সরাসরি কানাডাকে আমেরিকার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দিলেন তিনি। সঙ্গে রাখলেন ‘গোল্ডেন ডোম’ বিনা পয়সায় দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও।
ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছিলেন, এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত হতে আগ্রহ দেখিয়েছে কানাডা! তবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানান, তার দেশ অবশ্যই উচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চায়। কী ভাবে আমেরিকার এই নয়া ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়, সেই নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। যদিও কার্নি মনে করিয়ে দেন, কানাডার সার্বভৌমত্ব সব কিছুর আগে। সেই সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ না করেই সব পদক্ষেপ করতে রাজি। সেই আবহেই ট্রাম্প নিজের সমাজমাধ্যমে জানান, আমেরিকার ৫১ তম প্রদেশ হলেই ‘গোল্ডেন ডোম’ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে কানাডা। তবে ওরা যদি এই প্রস্তাবে রাজি না হয় তবে ‘গোল্ডেন ডোম’ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে গলে গুনতে হবে ৬১০০ কোটি ডলার। আমেরিকার অংশ হিসাবে যোগ দিলে ওদের খরচ হবে শূন্য ডলার! যদি ট্রাম্পের এই প্রস্তাব নিয়ে এখনও পর্যন্ত কানাডার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
গত সপ্তাহেই ‘গোল্ডেন ডোম’ তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। আমেরিকাকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচাতে এই নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরিকল্পনার কথা করেন তিনি। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে আমেরিকার কোষাগার থেকে দিতে হবে প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৫ লক্ষ কোটি টাকা)। প্রাথমিক ভাবে, এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরিতে আড়াই হাজার কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ২ লক্ষ ১৪ হাজার কোটির বেশি) দেওয়া হবে। ট্রাম্পের অনুমান, ২০২৯ সালের মধ্যেই আমেরিকার হাতে চলে আসবে এই নয়া আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন:
নয়া এই অস্ত্র বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম বলেই দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ‘গোল্ডন ডোম’-এর মাধ্যমে মহাকাশভিত্তিক ইনফ্রারেড লেজ়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে আমেরিকার। এর সাহায্যে হাইপারসনিক, ব্যালেস্টিক এবং ক্রুজ়— তিন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রকে মাঝ-আকাশে ধ্বংস করতে পারবে মার্কিন ফৌজ। তবে ‘গোল্ডেন ডোম’ তৈরিতে ট্রাম্প যে খরচের কথা বলছেন, তার থেকেও অনেক বেশি খরচ হতে পারে, এমনই মনে করছে মার্কিন আইনসভার বাজেট অফিস।