প্রতীকী ছবি।
আবার এসেছে আশ্বিন মাস। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে আসছে দুর্গাপুজো, আর তার সঙ্গে প্রতি বছরের মতোই মন কেমনের পালা। প্রবাসে কাজের ফাঁকে আমরা চেষ্টা করি ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার। কিন্তু সব কি আর আগের মতো আছে? অতিমারির প্রকোপ সারা বিশ্বে, তার অপরিবর্তনীয় প্রভাব পড়ছে সকলের জীবনে। বাড়ি ফেরার আনন্দের চেয়েও তাই এখন বড় হয়ে উঠেছে রোগের কবলে পড়ার ভয়, নিকটবর্তী আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দুরত্ব বজায় রাখাতেই তাই স্বস্তি।
থাকি জার্মানির ডার্মস্টাটে। ৩০ কিলোমিটার দূরে সব থেকে কাছের বড় শহর— ফ্রাঙ্কফুর্ট। সেখানে একাধিক দুর্গাপুজো হয়। গত বছর কোভিডের প্রকোপ এড়াতে পুজো কমিটিগুলি অনলাইন পুজোর ব্যবস্থা করেছিল। নতুন পরিস্থিতিতে যৎসামান্য আয়োজনে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল পুজোর আসর। প্রযুক্তির হাত ধরে বাড়িতে বসেই নাচ, গান, আবৃত্তি, শ্রুতিনাটক ছড়িয়ে গিয়েছিল সবার ঘরে ঘরে। কোথাও ফেসবুক পেজে গান, তো কোথাও জ়ুমে নাটকের মহড়া। গৃহবন্দি জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে নাচ, গান, নাটক দিয়ে আমরা সাজিয়েছিলাম বিবিধ ফেসবুক ও ইউটিউব সিরিজ়। তার সঙ্গে নিয়ম মেনে, দুরত্ব বজায় রেখে, পার্কে বসে বিকেলের আড্ডা ও হেঁসেলের কারিকুরিও ছিল। সব মিলিয়ে বাঙালির পুজোর আমেজে বিশেষ কমতি পড়েনি।
আরও একটা বছর কেটে গেল কোভিডের সঙ্গে লড়াই করে। নিয়মের শিকলে আবদ্ধ জীবনে পরিবর্তন এসেছে অনেক, কেউ প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, কেউ বা চাকরি। গত বছরের মতো এ বছরেও মাতৃপক্ষে মানুষকে একটু আনন্দ দেওয়ার সমবেত প্রয়াসে এগিয়ে এসেছে এখানকার বাঙালি সংগঠনগুলি। নিয়ম মেনেই পুজো হবে আগের মতো। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, করোনার প্রতিষেধক নেওয়া থাকলে জমায়েতে অংশ নেওয়া যাবে।
আমাদের এখানে পুজো হয় দেশের সূচি মেনেই, অর্থাৎ সপ্তমী থেকে দশমী। পুজো প্যান্ডেলের মজা, সমবেত কণ্ঠে মন্ত্রোচ্চারণ, আড্ডা, খাওয়াদাওয়া দিয়ে মোড়া থাকবে চারটে দিন। কিন্তু অনেকেই কোভিডের ভীতি কাটিয়ে পুজোমণ্ডপে হয়তো আসতে পারবেন না। শুনেছি, তাঁদের জন্য অনলাইনে পুজো দেখার ব্যবস্থা থাকবে।
সুস্থ থাকার, সুস্থ রাখার আশায়, ব্যস্ততার মধ্যেও সময় করে নিয়ে আনন্দোৎসবের স্বল্প প্রয়াসে মেতেছি সবাই। আশা করছি, সমবেত উদ্যাপনেই এ বারের দুর্গাপুজো সুষ্ঠু ভাবে কেটে যাবে। কোভিডের সঙ্গে নিরন্তর লড়াইয়ের ফাঁকে বাঁচার রসদ তো আমাদের এই দুর্গাপুজো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy