Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পাক গুলির ছড়াছড়ি, ‘পুরোদস্তুর যুদ্ধের সম্ভাবনা’ দেখছেন ইমরান

রাষ্ট্রপুঞ্জে আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে নিজের বক্তৃতার আগে এই হুঁশিয়ারি দিয়ে ইমরান আসলে আন্তর্জাতিক মহলকে কাশ্মীর নিয়ে সক্রিয় হওয়ার জন্য চাপ দিলেন বলে কূটনীতিকদের বক্তব্য।

ছবি: এএফপি।

ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:০৭
Share: Save:

নিয়ন্ত্রণরেখায় সারা বছর ধরে বিনা প্ররোচনায় ২০৫০ বারেরও বেশি সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। মারা গিয়েছেন ২১ জন ভারতীয়। দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার যখন এই পরিসংখ্যান দিচ্ছেন, তার আগেই ‘পুরোদস্তুর যুদ্ধের সম্ভাবনা’-র কথা বলে দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এমনকি পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারিও দিলেন। একটি চ্যানেলে পাক প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘দু’টো পরমাণু শক্তিধর দেশ যখন লড়ে, সেই লড়াই যদি পুরোদস্তুর যুদ্ধ হয়, তা হলে প্রত্যেক মুহূর্তে এই সম্ভাবনা থাকে যে, সেটা পরমাণু যুদ্ধে গড়াবে।’’

রাষ্ট্রপুঞ্জে আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে নিজের বক্তৃতার আগে এই হুঁশিয়ারি দিয়ে ইমরান আসলে আন্তর্জাতিক মহলকে কাশ্মীর নিয়ে সক্রিয় হওয়ার জন্য চাপ দিলেন বলে কূটনীতিকদের বক্তব্য। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ‘অবশ্যই’ মনে করেন, ভারত-পাক যুদ্ধের সম্ভাবনা রয়েছে এবং সেই বিপর্যয়ের প্রভাব ভারতীয় উপমহাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে যাবে। তাই তাঁরা প্রতিটি আন্তর্জাতিক মঞ্চকে সক্রিয় হতে বলছেন। অথচ নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনায় নারাজ ইমরান। তাঁর অভিযোগ, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের মাধ্যমে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করে বেআইনি ভাবে কাশ্মীরে হাত বসিয়েছে ভারত। এর পরে আপাতত আলোচনার প্রশ্ন নেই।

সত্যিই ভারত-পাক যুদ্ধ বাধলে কী হবে? কারও কারও মতে, ইমরান নিজেই মেনে নিয়েছেন, যুদ্ধে হার হবে পাকিস্তানের। কারণ তিনি বলেছেন, ‘‘যদি পাকিস্তান কোনও পুরোদস্তুর যুদ্ধে নামে এবং হেরে যেতে থাকে, তখন সামনে দু’টো রাস্তা থাকবে— আত্মসমর্পণ অথবা স্বাধীনতার জন্য আমৃত্যু লড়াই। আমি জানি, পাকিস্তানিরা দ্বিতীয়টাই করবেন।’’

তুলনায় দিল্লির হুঁশিয়ারি কিছুটা প্রচ্ছন্ন। রবীশ কুমার বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানের নিরন্তর সংঘর্ষবিরতি, জঙ্গি ঢোকানো, ভারতীয় সাধারণ নাগরিক ও সামরিক ছাউনিকে নিশানা করা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছি। পাকিস্তানকে বারবার আবেদন করা হয়েছে, তারা ২০০৩ সালের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি মেনে সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি বজায় রাখুক।’’ কাশ্মীরের কর্তারা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি জনা চব্বিশ জঙ্গি ঢুকে পড়েছে শ্রীনগরে। ভারতীয় সেনা কী ভাবে নিয়ন্ত্রণরেখা-লাগোয়া স্কুলের বাচ্চাদের পাকিস্তানের গোলাগুলি থেকে উদ্ধার করে আনছে, ইন্টারনেটে ছড়িয়েছে সেই ভিডিয়ো। তা সত্ত্বেও ভারত চূড়ান্ত সংযম দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন রবীশ।

ইমরানও নিজেকে ‘শান্তিবাদী ও যুদ্ধবিরোধী’ বলে দাবি করে বলেছেন, যুদ্ধে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না। পাকিস্তান নিজে থেকে যুদ্ধ শুরুও করবে না। তাঁর দাবি, ভারতের সঙ্গে আলোচনার দরজাই খুলতে চেয়েছিলেন তিনি। কাশ্মীর জটের রাজনৈতিক সমাধান চেয়েছিলেন। কিন্তু ভারত ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে চাইছে পাকিস্তানের উপরে। জঙ্গিদের টাকা জোগানো বন্ধ না-করলে পাকিস্তানকে কালো তালিকায় তুলবে বলেছে এফএটিএফ। ইমরানের কথায়, ‘‘ওরা (ভারত) আমাদের আর্থিক ভাবে দেউলিয়া করতে চায়। তখনই পিছিয়ে এসেছি। আমরা বুঝেছি, ওই সরকারের কর্মসূচিই হল, পাকিস্তানকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেওয়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Imran Khan India Pakistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE