Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Myanmar

মায়ানমারে জট কাটাতে তৎপর মোদী সরকার

মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নামে হিংসার তীব্র নিন্দা করল ভারত।

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩২
Share: Save:

মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নামে হিংসার তীব্র নিন্দা করল ভারত। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর গুলি চালানো এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ আন্দোলনের উপর হিংসাত্মক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিদেশ মন্ত্রকের সদ্যনিযুক্ত মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানান, “যে কোনও ধরনের হিংসার আমরা নিন্দা করি। আমরা বিশ্বাস করি আইনের শাসন বলবৎ থাকুক। মায়ানমারে শান্তি ফিরে আসার পক্ষে ভারত।” তাঁর কথায়, “রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছি আমরা। বর্তমান জটটি ছাড়ানোর জন্য যে চেষ্টাই হোক আমাদের তার প্রতি সমর্থন রয়েছে। আসিয়ান-এর তরফ থেকে যে চেষ্টা করা হচ্ছে, আমরা তার সঙ্গেও রয়েছি। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গেও এই বিষয়ে আলাপ আলোচনা চলছে। আমরা ভারসাম্য বজায় রেখে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে চাই।”

মায়ানমারে এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই গত কাল ভিডিয়ো মাধ্যমে বসেছিল বিমস্টেক দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক। ভারত, শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ড, বাংলাদেশের পাশাপাশি মায়ানমারও এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সদস্য। ওই বৈঠকে বিমস্টেক-এর সনদ চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আসন্ন বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে (শ্রীলঙ্কায়) তা গ্রহণ করা হবে। বিমস্টেক-এর বৈঠকে মায়ানমারের সেনা-ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “বিমস্টেক বহুপাক্ষিক সংস্থা। তাই বহুপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে এটাই স্বাভাবিক।”

তবে বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধি, শান্তি এবং নিরাপত্তার হাত ধরে এগোয়। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে আমরা চিরাচরিত এবং নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের মুখে। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৭ সাল থেকে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা তিন বার বৈঠক করেছেন। সন্ত্রাসবাদ, উপকূলবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তা, সাইবার সন্ত্রাস-সহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে কথা হয়েছে।”

অন্য দিকে মায়ানমারে গণতন্ত্রকামী আন্দোলনের কোমর ভাঙতে এ বার আরও কড়া পদক্ষেপ করল শাসক জুন্টা। পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত শুক্রবার থেকে দেশ জুড়ে বন্ধ করে দেওয়া হল বেতার ইন্টারনেট পরিষেবা। যদিও তাতে দমেননি আন্দোলনকারীরা। পাল্টা সেনার বিরুদ্ধে গেরিলা হানার প্রস্তুতির ডাক দিচ্ছেন তাঁরা। এ দিকে দেশের অপসৃত নেত্রী আউং সান সুচি-র বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ এনেছে জুন্টা। বৃহস্পতিবার তাঁর আইনজীবী জানান, নেত্রীর বিরুদ্ধে জাতীয় গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের দায় চাপানো হয়েছে। আরও চারটি অভিযোগ আগে থেকেই ঝুলছে তাঁর নামে। এটি পঞ্চম। ব্রিটিশ রাজত্বের সময় তৈরি এই আইন ভাঙার বিষয়টি প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে মায়ানমারে। গত ২৫ মার্চ খাতায় কলমে ধৃত অস্ট্রেলীয় আর্থিক উপদেষ্টা সিন টার্নেলের পাশাপাশি সুচির বিরুদ্ধে জাতীয় গোপনীয়তা ভঙ্গের মতো গুরুতর অভিযোগটি আনা হলেও ৩০ মার্চের আগে তাঁকে বিষয়টি জানানো হয়নি বলে জানান সুচির আইনজীবী।

মোবাইল ডেটা পরিষেবার পাশাপাশি আজ থেকে যে বেতার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবায় কোপ পড়তে চলেছে তা অবশ্য আগে থেকেই জানতেন অধিকাংশ বাসিন্দা। আন্দোলনকারীদের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি ‘সেনার অত্যাচার সংক্রান্ত তথ্য ও চিত্র’ ছড়িয়ে পড়ায় লাগাম পরাতেই এই পদক্ষেপ, দাবি বিক্ষুব্ধদের। গণতন্ত্র ফেরানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ করা যাবে না বলে হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India army Myanmar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE