লড়াইটা কখনও সামরিক, কখনও রাজনৈতিক আর কখনও বা হল কূটনীতির ময়দানে। ভোর রাতে শুরুটা হয়েছিল পাকিস্তানের আকাশে ঢুকে ভারতীয় বায়ুসেনার মিরাজ যুদ্ধবিমান দিয়ে আক্রমণের মধ্য দিয়ে। প্রতিপক্ষকে কোনও কিছু বুঝতে না দিয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্তের ২৩.৬ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটরা। অব্যর্থ আঘাত হেনে প্রতিটি বিমানই অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসে ভারতের মাটিতে। এর পরই শুরু হয় কূটনীতির লড়াই। পাক সেনা একের পর এক বিবৃতি দিতে থাকলেও চুপ ছিল ভারত। সাড়ে এগারোটায় প্রথম নীরবতা ভেঙে বক্তব্য রাখে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। বলা হয়, প্রতিরোধের লক্ষ্যে অসামরিক আঘাত হেনেছে ভারত।
নীরবতার কারণটা অবশ্য বোঝা গেল বেলা গড়াতেই। ফ্রান্স এবং অস্ট্রেলিয়ার বিবৃতি প্রমাণ করল কূটনীতির লড়াইতে পাকিস্তানের থেকে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে ভারত। ফ্রান্সের বক্তব্য, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইতে ভারতের বাধ্যবাধকতা সবাইকে বুঝতে হবে।’ অন্য দিকে অস্ট্রেলীয় বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতি, ‘নিজেদের মাটিতে জইশ-ই-মহম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈবা সহ সমস্ত জঙ্গি ঘাঁটি বন্ধ করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক পাকিস্তান।’ ফ্রান্স এবং অস্ট্রেলিয়ার এই বিবৃতিতে বোঝা গেল, দিনটা যে ভাবে শুরু করেছিল ভারত, শেষও হল সে ভাবেই। অর্থাৎ, দিনের শেষে সেই অ্যাডভান্টেজ ভারত।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে বায়ুসেনার পাইলটরা মিরাজ যুদ্ধবিমান দিয়ে অভিযান চালানোর সঙ্গে সঙ্গেই নয়াদিল্লিতে তৎপর হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় কূটনীতিকরা। কী কারণে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের আকাশে ২৩.৬ কিলোমিটার ঢুকে ভারতকে ১০০০ কেজি বোমাবর্ষণ করে বালাকোটের জইশ ঘাঁটি ধ্বংস করতে হল, তাই বোঝাতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেন বিদেশমন্ত্রকের কর্তাব্যক্তিরা। সেই কূটনীতিতে নেতৃত্ব দেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল। শুরুতেই আমেরিকা, ইংল্যান্ড, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক-সহ ছয় আসিয়ান দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করেন ভারতের বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল।