লু ক্যাঙ।—ফাইল চিত্র।
পুলওয়ামায় হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল দ্বিধা ছিল না চিনের। কিন্তু পাক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের প্রত্যাঘাতের পর আর সেই পথে হাঁটল না তারা। উল্টে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিল বেজিং।
মঙ্গলবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় বায়ুসেনার বোমাবর্ষণের খবর সামনে আসতেই বেজিংয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লু ক্যাঙ। সেখানে তিনি বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দুই গুরুত্বপূর্ণ দেশ ভারত এবং পাকিস্তান। গোটা উপমহাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তাদের মধ্যে মজবুত সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা থাকা একান্ত প্রয়োজন। আশাকরি দু’পক্ষই সংযত হবে। আগ্রাসনের বদলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নতির চেষ্টা করবে।”
ভারতীয় বিদেশ সচিবের তরফে এই প্রত্যাঘাতকে প্রতিরোধের লক্ষ্যে অসামরিক অভিযান হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তা নিয়ে প্রশ্ন করলে লু ক্যাঙ বলেন, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল গোটা পৃথিবী। তাতে সকলের সহযোগিতা কাম্য।” সোমবার রাতেই পাক সরকারের সঙ্গে এই নিয়ে তাঁদের কথা হয়েছে বলে জানান লু ক্যাঙ। তাঁর দাবি, সোমবার চিনের স্টেট কাউন্সিলর তথা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনা হয় পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির। একই পরামর্শ দেওয়া হয় তাঁকে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে ঝামেলা মিটিয়ে নিতে বলা হয়, যাতে সন্ত্রাস দমনে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে গোটা উপমহাদেশে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যায়।
আরও পড়ুন: ২০ বছর পর বদলা! পাকিস্তানে ঢুকে কন্দহর বিমান হাইজ্যাকের মূল চক্রীকে নিকেশ করল বায়ুসেনা
আরও পড়ুন: দেশ নিরাপদ হাতে রয়েছে, মাথা নত হতে দেব না: প্রত্যাঘাতের পরে বললেন মোদী
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ বহুদিনের। জইশ-ই-মহম্মদ চাঁই ও কন্দহর বিমান ছিনতাইয়ের মূল চক্রী মাসুদ আজহারও সেখানেই রয়েছে। এর আগে, ২০১৬ সালে তারই নির্দেশে পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায় একদল ফিদায়েঁ জঙ্গি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে হামলাও তারই নির্দেশে। হামলার পর ভিডিয়ো প্রকাশ করে তার দায়ও স্বীকার করে জইশ-ই-মহম্মদ। কিন্তু তা সত্ত্বেও হামলার দায় অস্বীকার করে ইমরান খান সরকার।
শুরু থেকেই মাসুদ আজহারকে আড়াল করে এসেছে চিন। পুলওয়ামায় হামলার পরও পাকিস্তানের পাশে ছিল তারা। এ ভাবে কোনও দেশের উপর সন্ত্রাসী হামলার দায় চাপিয়ে দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করে তারা। কিন্তু এ দিন ভারতীয় বায়ুসেনা পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করতেই, অবস্থান পাল্টে গেল তাদের। দুই দেশকেই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিল তারা।
দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় ব্রিটেনও। সূত্রের দাবি, ভারতীয় বায়ুসেনার এই অভিযানের কয়েক ঘণ্টা আগেই ব্রিটেনের বিদেশসচিব জেরেমি হান্ট ফোনে ভারত ও পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। দু’দেশকেই আলোচনায় আস্থা রাখার আর্জি জানান তিনি। আজ হামলার পরে লন্ডন থেকে বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘জঙ্গিদের ধরাশায়ী করে এলাকায় শান্তি জিইয়ে রাখা নিয়ে বরাবরের মতোই আমরা দু’দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy