Advertisement
E-Paper

লাদাখে ভারত-চিন টক্কর, মুখোমুখি দাঁড়াল দু’দেশের সেনা

নিজেদের অবস্থান থেকে সরে না এসেই ভারত ডোকলামে চিনের সঙ্গে সমস্যা মিটিয়েছে বলে সম্প্রতি সংসদে দাবি করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। কিন্তু এ বার লাদাখে ফের মুখোমুখি দাঁড়াল দু’দেশের সেনা। এই ঘটনায় নরেন্দ্র মোদীর চিন নীতি ফের প্রশ্নের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন কূটনীতিকদের একাংশ।

সাবির ইবন ইউসুফ ও প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৪৮

নিজেদের অবস্থান থেকে সরে না এসেই ভারত ডোকলামে চিনের সঙ্গে সমস্যা মিটিয়েছে বলে সম্প্রতি সংসদে দাবি করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। কিন্তু এ বার লাদাখে ফের মুখোমুখি দাঁড়াল দু’দেশের সেনা। এই ঘটনায় নরেন্দ্র মোদীর চিন নীতি ফের প্রশ্নের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন কূটনীতিকদের একাংশ।

সেনা সূত্রে খবর, ডেমচকের কাছে শেরডং-নেরলং নাল্লান এলাকায় সপ্তাহ দুয়েক আগে অনুপ্রবেশ করে চিনা সেনা। স্থানীয় পোশাক পরে ছাগল চরাতে চরাতে ভারতীয় এলাকায় ঢুকে পড়েন চিনা সেনারা। তার পরে সেখানে পাঁচটি তাঁবু খাটিয়ে ফেলেন তাঁরা। খবর পেয়ে ওই এলাকায় চিনা সেনার মুখোমুখি দাঁড়ায় ভারতীয় সেনাও।

লাদাখে মোতায়েন সেনার ১৪ নম্বর কোরের কর্তারা জানিয়েছেন, নেরলং এলাকায় একটি রাস্তা তৈরি করছিল স্থানীয় প্রশাসন। সেই কাজ বন্ধ রাখার দাবি করেছে চিনা সেনা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে ওই এলাকা চিনের বলে দাবি তাদের। চিনাদের জন্য ওই এলাকায় পশুচারণের অধিকারও দাবি করেছে তারা। ভারত এই দাবি মানতে রাজি নয়। ব্রিগেড কম্যান্ডার স্তরে বৈঠকের পরে দু’টি তাঁবু সরিয়েছে চিনা সেনা। কিন্তু এখনও মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছেন দু’দেশের জওয়ানেরা।

লে এলাকার প্রশাসনিক কর্তা অবনী লাভাসা জানিয়েছেন, বসন্ত ও শরৎ শেরডং-নেরলং এলাকায় পশুচারণের মরসুম। কিন্তু গোলমালের আশঙ্কায় ভারতীয় পশুপালকদের ওই এলাকা থেকে সরিয়ে এনেছে সেনা। তাঁরা আপাতত ওই এলাকা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে উলং-এ তাঁবু খাটিয়ে রয়েছেন। কিন্তু পশুচারণ না করতে পারলে তাঁরা বিপাকে পড়বেন বলে দাবি পশুপালকদের। তাই ওই এলাকায় ফেরার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে বিভিন্ন এলাকার অধিকার নিয়ে মতভেদ রয়েছে ভারত ও চিনের। সেখানে মাঝেমধ্যেই অনুপ্রবেশের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু গত বছরে ভারত-চিন-ভুটান সীমান্তের ডোকলামে চিনা অনুপ্রবেশের ফলে বড় ধরনের কূটনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়। সেই সঙ্কট চলাকালীনই লাদাখের প্যাংগং হ্রদের কাছে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল চিনা সেনা। সেই সময়ে ভারতীয় জওয়ানদের সঙ্গে তাদের ধ্বস্তাধ্বস্তিও হয়। শেষ পর্যন্ত ডোকলামেও মুখোমুখি দাঁড়ানো অবস্থা থেকে পিছু হটে দু’দেশের সেনা। কিন্তু কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের দাবি, ডোকলামে তৈরি পরিকাঠামো সরায়নি চিনা সেনা। বস্তুত বেজিংয়ের কাছে নতিস্বীকার করেছে মোদী সরকার।

আরও পড়ুন: আজানে কি শব্দদূষণ, মেপে দেখার নির্দেশ

সরকারি সূত্রের দাবি, উহানে মোদীর সঙ্গে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের বৈঠকের পরে চিনা সেনার আগ্রাসী মনোভাব কমেছে। তবে ডেমচক-সহ পূর্ব লাদাখে গত কয়েক মাস যাবৎ সক্রিয়তা বাড়িয়েছে তারা। জুলাই মাসেও পূর্ব লাদাখে অনুপ্রবেশ করে ভারতীয় পশুপালকদের তাঁবু ছিঁড়ে দিয়েছিল চিনা সেনা। সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের ওই এলাকা সফরে যান তিব্বতি ধর্মগুরু ও নির্বাসিত সরকারের প্রধান দলাই লামা। তার ফলেই চিন ওই এলাকায় ফের আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে কি না সেই প্রশ্নও ভাবাচ্ছে মোদী সরকারের কর্তাদের।

ভারতীয় যাযাবর জনজাতির পশুপালকদের বিক্ষোভ নিয়েও চিন্তিত প্রশাসন। সেনা ও প্রশাসনের কর্তারা মেনে নিচ্ছেন, চিনা আগ্রাসনের পাশাপাশি ভারত সরকারের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ওই পশুপালকেরা। তাঁদের দাবি, ওই এলাকায় পশুপালকদের সুরক্ষার জন্য সঠিক পদক্ষেপ করে
না সরকার।

Ladakh India China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy