Advertisement
E-Paper

মামদানির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকে ভারত-পাক প্রসঙ্গও! কী কথা হল দুই বিপরীতমনস্ক নেতার? কিসে মতের মিল, কিসে অমিল

বামপন্থী ডেমোক্র্যাট নেতা ৩৪ বছরের মামদানি নিউ ইয়র্কের কনিষ্ঠতম মেয়র হতে চলেছেন। ৭৯ বছরের ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিয়ে আমেরিকায় কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। কারণ, দু’জনের মধ্যে মতাদর্শগত পার্থক্য রয়েছে প্রচুর।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৪৪
নিউ ইয়র্কের হবু মেয়র ভারতীয় বংশোদ্ভূত জ়োহরান মামদানি এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার ওভাল অফিসে।

নিউ ইয়র্কের হবু মেয়র ভারতীয় বংশোদ্ভূত জ়োহরান মামদানি এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার ওভাল অফিসে। ছবি: রয়টার্স।

নিউ ইয়র্ক সিটির হবু মেয়র জ়োহরান মামদানির সঙ্গে শুক্রবার হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারত এবং পাকিস্তানের প্রসঙ্গও উঠেছে তাঁদের আলোচনায়। নিউ ইয়র্কের উন্নয়ন থেকে শুরু করে আমেরিকার অভিবাসন সমস্যা, নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন দুই নেতা। বৈঠকের শেষে সাংবাদিকদের ভিড় দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প বার বার দাবি করে এসেছেন, গত মে মাসে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সশস্ত্র সেনা সংঘাত তিনি থামিয়েছেন। শুক্রবার মামদানিকে পাশে নিয়েও ফের সেই দাবি করেন। জানান, তিনি বিশ্বের মোট আটটি যুদ্ধ থামিয়েছেন। তার মধ্যে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ অন্যতম। এ বিষয়ে মামদানির প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে দু’দিন আগেও ট্রাম্প এই প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। দাবি করেছিলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত চলাকালীন খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে ফোন করেন এবং জানান, ভারত যুদ্ধ করবে না। ৩৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ভয় দেখিয়ে দুই দেশকে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি করিয়েছেন, দাবি ট্রাম্পের। ভারত প্রথম থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে সমঝোতায় কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের দাবি অস্বীকার করে এসেছে।

বামপন্থী ডেমোক্র্যাট নেতা ৩৪ বছরের মামদানি নিউ ইয়র্কের কনিষ্ঠতম মেয়র হতে চলেছেন। ৭৯ বছরের ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিয়ে আমেরিকায় কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। কারণ, দু’জনের মধ্যে মতাদর্শগত পার্থক্য রয়েছে প্রচুর। বৈঠকের আগে পর্যন্ত একে অপরকে তাঁরা কটাক্ষ করেছেন। ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন মামদানি। কিন্তু বৈঠকের পর ছবি বদলে গিয়েছে। নিউ ইয়র্কের স্বার্থে পারস্পরিক সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বৈঠককে ‘দারুণ’ বলেছেন তিনি।

মামদানির সঙ্গে বৈঠকের শেষে ট্রাম্প বলেন, ‘‘অনেক বিষয়েই আমাদের মধ্যে মতানৈক্য আছে। কিন্তু আমার মনে হয়, আমরা সমাধানে পৌঁছোতে পারব। শেষ পর্যন্ত যা হবে, নিউ ইয়র্কের ভালর জন্যই হবে। যদি এই শহরে ও (মামদানি) সফল হয়, আমি খুশি হব।’’ নিউ ইয়র্ক প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘আজকের এই বৈঠকে আমি বেশ অবাক হয়েছি। মামদানিকে সাহায্যই করব।ওর কাজে ব্যাঘাত ঘটাব না। কারণ, আমি চাই নিউ ইয়র্ক সিটি মহান হয়ে উঠুক। আমি নিউ ইয়র্ককে ভালবাসি। কারণ, আমিও এই শহরেরই ছেলে।’’ মামদানির বামপন্থী সমাজতান্ত্রিক শাসনে নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা হিসাবে মানিয়ে নিতে পারবেন? ট্রাম্প বলেন, ‘‘মানিয়ে নেব। সত্যিই নেব। বিশেষত এখন, ওর সঙ্গে এই বৈঠকের পর। আমাদের দু’জনের কাছেই নিউ ইয়র্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’

বৈঠকের শেষে সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। বলেন, ‘‘আমি এত বড় বড় রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে এত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করি। তাতে কেউ পাত্তা দেয় না। আর এখন বাইরেও শয়ে শয়ে সাংবাদিক অপেক্ষা করে আছেন। মনে হচ্ছে, কোনও কারণে এই বৈঠক সংবাদমাধ্যমের কাছে খুব আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।’’ ভিড়ের মধ্যে থেকে এক সাংবাদিক মামদানির উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘আমি কি এখনও বলবেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একজন ফ্যাসিস্ট?’’ মামদানি এর উত্তর দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে থামিয়ে ট্রাম্প বলে ওঠেন, ‘‘আরে ঠিক আছে, ঠিক আছে। তুমি ‘হ্যাঁ’ বলে দিতে পারো। ব্যাখ্যা করার চেয়ে ‘হ্যাঁ’ বলে দেওয়া সহজ। আমি কিছু মনে করব না।’’

আমেরিকার অভিবাসন সমস্যা এবং তার মোকাবিলায় ট্রাম্পের নীতি নিয়ে বার বার দ্বিমত পোষণ করেছেন মামদানি। অনুপ্রবেশকারীদের নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তেও আপত্তি জানিয়েছেন। এই ক্ষেত্রে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর মতভেদ স্পষ্ট। তা নিয়েও শুক্রবারের বৈঠকে বিশদ আলোচনা হয়েছে। নিউ ইয়র্কের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ পরিযায়ী। মামদানি তাঁদের স্বার্থরক্ষার পক্ষে। কিন্তু ট্রাম্পের নীতি তাঁদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প বলেন, ‘‘মামদানি একটা সুরক্ষিত নিউ ইয়র্ক চায়। নিরাপদ হলেই নিউ ইয়র্ক মহান হয়ে উঠবে। রাস্তাঘাট যদি নিরাপদ না হয়, সাফল্য আসবে না।’’ বৈঠক শেষে মামদানিকে ডেমোক্র্যাটদের ‘সত্যিকারের নেতা’ বলেও উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প।

Donald Trump Zohran Mamdani New York City The White House
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy