ইরানের পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। তার পরেই আরও সক্রিয় হয়ে উঠল ইরান। রবিবার সকালে নতুন করে ইজ়রায়েলে হামলা শুরু করেছে ইরান। ছুড়েছে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র। এমনটাই জানিয়েছে ইজ়রায়েলের সেনা। তারা সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে। দেশ জুড়ে বাজছে সাইরেন। তেল আভিভ-সহ ইজরায়েলের বেশ কিছু শহরে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভেঙে পড়েছে বাড়ি।
রবিবার ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, কিছু ক্ষণ আগে সে দেশে ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি তারা জানিয়েছে, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইজ়রায়েলের নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার কথা জানিয়েছে সেনা। ইরানের ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ডের দাবি, তেল আভিভের কাছে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর লক্ষ্য করেও হামলা চালিয়েছে তারা।
ইজরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদম (এমডিএ) জানিয়েছে, তেল আভিভের বেশ কিছু বহুতল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু আবার ধুলোয় মিশেছে। সেই ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে সংস্থাটি (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। ইরানের হানায় আহত হয়েছেন ১১ জন বলে জানিয়েছে এমডিএ। ইজরায়েলের উত্তরে হাফিফা শহরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মধ্য ইজ়রায়েলের কিছু অংশে বোমা নিষ্ক্রিয়করার কাজ করছে পুলিশের বিশেষ দল। সেই সঙ্গে ভেঙে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধারের কাজও চলছে।
শনিবার (স্থানীয় সময়) রাতে ইরানের অন্তত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায় আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকার সেনাবাহিনী ইরানের ফরডো, নাতানজ় ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে ‘সফল ভাবে’ হামলা চালিয়েছে। ট্রাম্পের দাবি, ‘অভিযান’-এর পরে সমস্ত মার্কিন বিমান আপাতত ইরানের আকাশসীমার বাইরে রয়েছে। আমেরিকার এই হামলার পরেই সক্রিয় হল ইরান।
১৩ জুন ইরানের পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজ়রায়েল। তাতে নিহত হন সে দেশে ন’জন পরমাণু বিজ্ঞানী। সামরিক কর্তাদেরও প্রাণ যায়। পাল্টা ইজ়রায়েলে হামলা শুরু করে ইরান। দুই দেশের সংঘাতের মধ্যে জড়াল এ বার আমেরিকা। ইরানকে আমেরিকা দু’সপ্তাহ সময় দিয়েছিল। ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, আমেরিকা আদৌ ইরানে আক্রমণ করবে কি না, দু’সপ্তাহের মধ্যে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ইরানে হামলা চালাল আমেরিকা।
ইজ়রায়েলের দাবি, ইরানের হাতে পরমাণু অস্ত্র থাকলে তা বিপজ্জনক হবে। সে কারণে তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করার দাবি তুলেছে তারা। ইরান দাবি করেছে, মানুষের কল্যাণের জন্যই পরমাণু নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে তারা।