মার্কিন হামলার পর এ বার কূটনৈতিক দিক থেকেও আগ্রাসী তেহরান। দেশের পরমাণু কর্মকাণ্ডের তথ্য আর রাষ্ট্রপুঞ্জকে জানতে দেবে না তারা। বুধবার এই মর্মেই বিল পাশ হল ইরানে। এমনটাই জানিয়েছে ইরান সরকার পোষিত ‘নৌরনিউজ’।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু নজরদার সংস্থার সঙ্গে আর সহযোগিতা করা হবে না, এই মর্মে বিল পাশ হয়েছে ইরানের পার্লামেন্টে। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।
ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে এবং তা সম্পূর্ণ হলে ইজ়রায়েল অস্তিত্বসঙ্কটে পড়বে, এই আশঙ্কায় তেহরানে হামলা চালায় তেল আভিভ। ইরানও প্রত্যাঘাত করে। আমেরিকাও জানিয়ে দেয়, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করলে তা তারা মেনে নেবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও হুঁশিয়ারি দেয় তেহরানকে। ইরান-ইজ়রায়েলের মধ্যে সংঘর্ষের আবহে আমেরিকাও ইরানে হামলা চালায়। ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্র— ফোরডো, নাতান্জ এবং ইসফাহানে হামলা চলে। পরে আমেরিকার হস্তক্ষেপে সংঘর্ষবিরতি হয় ইরান-ইজ়রায়েলের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জের সঙ্গে অসহযোগের সিদ্ধান্ত নিল তেহরান।
আরও পড়ুন:
-
ট্রাম্পের একটি শব্দ নিয়েই যত বিভ্রান্তি! ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে হামলার গোয়েন্দা রিপোর্ট ‘ফাঁস’ হতেই ফ্যাসাদে আধিকারিকেরা
-
ভোটার তালিকায় নাম তোলার নতুন নিয়ম বিহারে, ছটের পরেই শুরু হতে পারে ভোটগ্রহণ পর্ব
-
যুদ্ধে জিতল কে? তিন পক্ষই বলছে ‘আমরা সফল’! ইরান, ইজ়রায়েল, আমেরিকার পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি, পাল্টা যুক্তি কী
ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মহম্মদ বাকের কালিবাফ বুধবার জানান, ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে হামলা নিয়ে মুখই খোলেনি রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু নজরদার সংস্থা। যত ক্ষণ না তারা ইরানের পরমাণুকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে, তত ক্ষণ কোনও সহযোগিতা করা হবে না।
আমেরিকা এবং ইজ়রায়েল দুই দেশই ইরানের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র তৈরির যে অভিযোগ তুলেছে, তার খারিজ করেছে তেহরান। তাদের বক্তব্য, তারা মোটেই পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে না। শুধু পরমাণু প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ এবং ওষুধ তৈরি করছে, যা ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষের কাজে লাগবে।
ইরানের এই দাবি না-মেনে তাদের উপর হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। আমেরিকাও তা-ই। মার্কিন হামলার পরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ইরানের পরমাণুকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যদিও দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, ইরানের পরমাণুকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাত্র। কিন্তু ধ্বংস হয়নি। এতে তাদের পরমাণু কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাবে না। ইরানও এ কথা স্বীকার করেছে। সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ইমায়েল বাঘেই বলেছেন, ‘‘ইজ়রায়েল ও আমেরিকার লাগাতার হামলায় ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’