কানাডায় সরকার বদলের পরেও খলিস্তানপন্থী সংগঠনগুলির ভারত বিরোধী তৎপরতায় রাশ টানা যায়নি। এ বার নিষিদ্ধ কট্টরপন্থী খলিস্তানি গোষ্ঠী ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে) ভ্যাঙ্কুভারের ভারতীয় কনসুলেট ‘ঘেরাও এবং দখলের’ কর্মসূচি ঘোষণা করল! বৃহস্পতিবার ওই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। স্থানীয় ভারতীয় জনগোষ্ঠীকে বৃহস্পতিবার ওই কনসুলেট না যাওয়ার বার্তা দিয়েছে তারা।
কানাডায় নিযুক্ত নতুন ভারতীয় হাই কমিশনার দীনিশ পট্টনায়েকের মুখের ছবি ‘নিশানা করে’ একটি পোস্টারও প্রকাশ করেছে পলাতক সন্ত্রাসবাদী গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুনের সংগঠন। স্বাধীন ও সার্বভৌম খলিস্তান রাষ্ট্রের দাবিতে ২০২২ সাল থেকে রাজধানী অটোয়ার ভারতীয় হাই কমিশন এবং কানাডার বিভিন্ন শহরে ভারতীয় কনসুলেটে ধারাবাহিক ভাবে হিংসাত্মক বিক্ষোভ দেখিয়েছে এসএফজে। পোড়ানো হয়েছে জাতীয় পতাকা! কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকার প্রত্যক্ষ ভাবে খলিস্তানপন্থীদের মদত দেওয়ায় নয়াদিল্লি-অটোয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক কার্যত ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নের সরকার চলতি মাসে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছিল, আগের জমানায় বব্বর খালসা, ‘ইন্টারন্যাশনাল শিখ ইউথ ফেডারেশন’, ‘শিখস ফর জাস্টিসের’ (এসএফজে)-র মতো খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি বহু দিন ধরে কানাডার মাটিতে নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে এসেছে! এসএফজের তরফে জানানো হয়েছে, খলিস্তানপন্থী শিখ নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরকে হত্যার প্রতিবাদ জানাতেই ভ্যাঙ্কুভারের ভারতীয় দূতাবাস দখলের এই কর্মসূচি। নতুন করে কানাডার মাটিতে খলিস্তানপন্থীদের এই তৎপরতা দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক টানাপড়েন তৈরি করতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় ভারত সরকারের এজেন্টরা জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছিলেন কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। তাঁর সেই দাবিকে ‘অবাস্তব’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উড়িয়ে দেয় ভারত। ঘটনার দায়ও অস্বীকার করা হয় নয়াদিল্লির তরফে। এর পরে ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির অন্দরে বিদ্রোহের জেরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রুডো কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। ‘ভারত বিরোধী’ হিসেবে পরিচিত ট্রুডোর স্থানে কুর্সিতে বসেন কার্নে। তার পরেই ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি।