ইরাকে সঙ্কটের মুহূর্তে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে এক ধাপ এগোনোর সিদ্ধান্ত নিল কুর্দ সম্প্রদায়। উত্তরের কুর্দপ্রধান এলাকা ইরাক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নয়া রাষ্ট্র গঠন করবে কি না তা নিয়ে গণভোট করতে চায় তারা।
দু’দশক ধরে স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে কুর্দরা। সাদ্দাম হুসেনের জমানায় তাদের রক্ষা করার জন্য উত্তরে উড়ান নিষিদ্ধ এলাকা কার্যকর করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। কুর্দ এলাকায় হামলা চালালে আন্তর্জাতিক বাধার মুখে পড়তে হত সাদ্দাম বাহিনীকে। ইরাক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কুর্দ রাষ্ট্র গঠনের দাবি দীর্ঘদিনের। তুরস্কের কুর্দরাও ওই রাষ্ট্রে যোগ দিতে আগ্রহী।আইএসআইএল জঙ্গিদের সঙ্গে শিয়াপ্রধান নুরি অল-মালিকি সরকারের সংঘর্ষে ইরাকের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তখনই বিচ্ছিন্ন হওয়ার ডাক তীব্র করেছে কুর্দ সম্প্রদায়। কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি গণভোটের আয়োজন করতে চলেছেন তাঁরা। উদ্দেশ্য একটাই। নিজেদের স্বাধীন কুর্দ রাষ্ট্র গঠন। বিগত দু’দশক ধরেই স্বায়ত্তশাসনে অভ্যস্ত কুর্দরা।
খনিজ তেল তো বটেই, উত্তর ইরাকের পাহাড় ঘেরা কুর্দিস্তান বিখ্যাত তার গম উৎপাদনের জন্যও। স্বায়ত্তশাসনে থাকাকালীনই নিজেদের তেল উৎপাদন শিল্প গড়ে তুলেছে তারা। রয়েছে নিজেদের সেনাও। সারা দেশ যখন আইএসআইএলের দখলে চলে যাচ্ছে, তখন কুর্দ এলাকা রক্ষায় তৎপর সুশিক্ষিত ওই ‘পেশমের্গা’ সেনা। তেলসমৃদ্ধ কিরকুক-সহ কয়েকটি এলাকায় আইএসআইএলের সঙ্গে সংঘর্ষও হয়েছে তাদের। বারজানি স্পষ্ট জানিয়েছেন, কিরকুক বাদ দিয়ে তাঁদের স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরির স্বপ্ন কোনও দিনই বাস্তবায়িত হতে পারে না। তবে বারজানি যা-ই দাবি করুন, গণভোট হলেও তার ফলাফল বাগদাদ সরকার মানবে কি না, সে প্রশ্নও ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে। আমেরিকা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, তারা কুর্দদের আলাদা রাষ্ট্র গঠনের দাবিকে একেবারেই সমর্থন করে না। উল্টে মার্কিন বিদেশ দফতর একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইরাকের এই দুর্দিনে বিচ্ছিন্নতার কথা না বলে কুর্দদের বাকি দেশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করা উচিত।