Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Malala Yousafzai

এ বার ভুল হবে না, মালালাকে হুমকি তালিবান জঙ্গির, প্রশ্নের মুখে ইমরান সরকার

পাক সরকারের ডিজিটাল মাধ্যমের প্রধানের টুইট বার্তা, ‘চরমপন্থীদের প্রশ্নে পাকিস্তান কোনও রকম আপস করবে না’।

মালালা ইউসফজাই।

মালালা ইউসফজাই। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:২২
Share: Save:

‘আগের বার বেঁচে গিয়েছিলে, এ বার আর কোনও ভুল হবে না’। নেটমাধ্যমে নারী-শিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম মুখ মালালা ইউসফজাই-কে এমনই হুমকি দেওয়া হল। নোবেলজয়ী মালালার উপর হামলায় দোষী সাব্যস্ত পাকিস্তানি তালিবান জঙ্গি এহসানউল্লা এহসানের নামে তৈরি একটি টুইটার হ্যান্ডল থেকে ওই হুমকি এসেছে। আর তাতেই আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নের মুখে পাকিস্তানের ইমরান খানের সরকার। ঘৃণ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত এক জন আসামি কী ভাবে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং নেটমাধ্যমেই বা কী ভাবে হুমকি দিচ্ছে, তা নিয়ে মালালা নিজেও সরব হয়েছেন।

সন্ত্রাসী সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর সদস্য এহসান ৯ বছর আগে মালালার উপর প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছিল। যে টুইটার হ্যান্ডল থেকে হুমকি এসেছে, সেটি তার নামেই তৈরি। ওই হ্যান্ডলটি আসলে এহসানই চালায় কি না, তা যদিও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। তবে টুইটার কর্তৃপক্ষ ওই হ্যান্ডলটি পাকাপাকি ভাবে মুছে দিয়েছেন। তবে গোটা ঘটনায় প্রশ্নের মুখে ইমরান খান সরকার, সে দেশের সেনা এবং গুপ্তচর সংস্থা।

মঙ্গলবার টুইটারে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন মালালা। তিনি লেখেন, ‘এই ব্যক্তি তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের প্রাক্তন মুখপাত্র। আমার উপর এবং দেশের নিরীহ মানুষের উপর চলা হামলার দায় স্বীকার করেছে সে। এখন নেটমাধ্যমেও মানুষকে হুমকি দিচ্ছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এবং ইমরান খানের কাছ জানতে চাই, এই মানুষটা জেল থেকে পালাল কী ভাবে’’?

হুমকি দেওয়া এই হ্যান্ডলটি মুছে দিয়েছে টুইটার।

হুমকি দেওয়া এই হ্যান্ডলটি মুছে দিয়েছে টুইটার।

ঘটনা প্রচার পেতেই ইমরান সরকারের ডিজিটাল মাধ্যমের প্রধান আরসালান খালিদ টুইটে মালালাকে জুড়ে লেখেন, ‘ওই অ্যাকাউন্টটি ভুয়ো। চরমপন্থীদের প্রশ্নে পাকিস্তান কোনও রকম আপস করবে না’।

২০১২ সালে মালালার উপর হামলা ছাড়াও ২০১৪ সালে পেশোয়ারের সেনা স্কুলে হামলার পিছনেও এহসানের হাত ছিল বলে অভিযোগ। ২০১৭ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পাক নিরাপত্তাবাহিনীর বিশেষ জেলখানায়। কিন্তু ২০২০-র জানুয়ারি মাসে সেখান থেকে চম্পট দেয় এহসান। নেটমাধ্যমে একটি অডিয়ো রেকর্ডিং প্রকাশ করে নিজেই সে কথা জানায় সে। দাবি করে, নিজে থেকেই আত্মসমর্পণ করেছিল সে। ৩ বছরের বেশি বন্দি রাখা হবে না বলে সেই সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পাক সরকার। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি তারা। বরং তার ছেলেমেয়েকেও জেলে পোরা হয়। তাই জেল ভেঙে পালিয়ে এসেছে সে।

এর পর নেটমাধ্যম মারফতই একাধিক সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারও দিতে দেখা যায় এহসানকে। প্রতিবার হ্যান্ডল মুছে দেওয়ার পর নতুন নতুন টুইটার হ্যান্ডলও তৈরি করতে দেখা যায় তাকে। তার পরই সম্প্রতি তার নামে তৈরি অন্য একটি অ্যাকাউন্ট থেকে মালালাকে হুমকি দেওয়া হয়। লেখা হয়, ‘পাকিস্তানে ফিরে এসো। তোমার এবং তোমার বাবার সঙ্গে অনেক হিসাব মেটানো বাকি রয়েছে। এ বার আর কোনও ভুল হবে না’। এই ঘটনাপ্রবাহের পর তাই আরসালানের দাবি নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE