স্পেন, ফ্রান্স এবং পর্তুগালের বিস্তীর্ণ এলাকায় সোমবার ভোর থেকেই দেখা দিয়েছে ব্যাপক বিদ্যুৎবিভ্রাট। যার ফলে কার্যত বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর অচল হয়ে গিয়েছে, চলছে না মেট্রোও। কোথাও একের পর এক মেট্রো সুড়ঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছে। হাসপাতালগুলিতেও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা।
আরও পড়ুন:
পর্তুগালের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় সময় অনুযায়ী সোমবার ভোরে আচমকা সারা দেশে বিদ্যুৎবিভ্রাট দেখা দেয়। একই অবস্থা হয় স্পেনেও। বিদ্যুৎবিহীন হয়ে যায় মাদ্রিদের বারাজ়াস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। কিছু ক্ষণের মধ্যেই অন্য বিমানবন্দরগুলিও স্থবির হয়ে পড়ে। ফলে বন্ধ হয়ে যায় বিমান পরিষেবা। দেশ জুড়ে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুই দেশের বাসিন্দারা অনেকেই বলছেন, তাঁদের মোবাইল নেটওয়ার্কও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছেন না তাঁরা।
অন্য দিকে, স্পেন ও পর্তুগালের মেট্রো পরিষেবাও বিঘ্নিত হয়েছে। বিদ্যুৎবিভ্রাটের ফলে দুই স্টেশনের মাঝের সুড়ঙ্গগুলিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে একের পর এক ট্রেন। দুই দেশেই আটকা পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী। শুধু তা-ই নয়, বিপাকে পড়েছে মাদ্রিদের লা পাজ় হাসপাতাল, পর্তুগালের একাধিক চিকিৎসাকেন্দ্রও। স্পেনের সীমান্তবর্তী ফ্রান্সের কিছু অংশের বাসিন্দারাও বিদ্যুৎবিভ্রাটের কথা জানিয়েছেন। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, বেলজিয়ামেও বেশ কয়েকটি এলাকাও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে কী কারণে এমন ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন:
পরিস্থিতি সামাল দিতে মনক্লোয়ায় একটি জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছে স্পেন সরকার। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। ফোনের লাইনে অতিরিক্ত চাপ এড়াতে জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া নাগরিকদের আপৎকালীন ১১২ নম্বরে ফোন না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখছে স্পেনের দু’টি প্রধান বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা এন্ডেসা এবং ইবারড্রোলা। অন্য দিকে, পর্তুগালের জাতীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি আরইএন (রেন) জানিয়েছে, সম্প্রতি ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত অ্যালারিক পর্বতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পেরপিগনান এবং পূর্ব নারবোনের মধ্যেকার একটি হাই-ভোল্টেজ বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সম্ভবত তার জেরেই এই বিপত্তি। তবে সাইবার হানার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
স্পেনের জাতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা রেড ইলেকট্রিকার তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ গোটা স্পেনে বিদ্যুতের সামগ্রিক ব্যবহার ৫০ শতাংশ কমে যায়, যা দেশজোড়া ‘ব্ল্যাকআউট’-এর দিকে ইঙ্গিত করে। রেড ইলেকট্রিকা জানিয়েছে, দীর্ঘ ক্ষণের চেষ্টায় স্পেনের উত্তর এবং দক্ষিণাংশে ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে। তবে, প্রযুক্তিগত কারণে এই প্রক্রিয়ায় আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে।