তরুণ প্রজন্মের বিক্ষোভে এ বার উত্তাল হয়ে উঠেছে মেক্সিকো। ক্রমশ বেড়ে চলা অপরাধমূলক ঘটনা, দুর্নীতি ও বিচার না পাওয়া ঘিরে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ প্রথম ফেটে পড়েছিল চলতি মাসের গোড়ায় পশ্চিম মেক্সিকোর উরুয়াপান শহরের মেয়র কার্লোস মানজোকে প্রকাশ্যে গুলি করে খুনের ঘটনায়। মেক্সিকো সিটিতে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে গত কাল বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শাইনবাউমের দাবি, ডানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলি ছক কষে উস্কানি ও অর্থ দিয়ে বিক্ষোভ সংগঠিত করছে।
মিচোয়াকানের উরুয়াপান শহরের মেয়র কার্লোস আলবার্তো মানজ়ো রডরিগ্স শহরে মাদকচক্র এবং হিংসা নিয়ে সরব ছিলেন। গত অগস্টে তিনি জলিসকো নিউ জেনারেশন কার্টেলের স্থানীয় মাথা রেনে বেলমন্তে ওরফে রিনোকে গ্রেফতার করান। সেটা ছিল অপরাধচক্রটির জন্য বড় ধাক্কা। গত ১ নভেম্বর ‘ডে অব দ্য ডেড’ উৎসব চলাকালীন, শত শত লোকের ভিড়ের মধ্যে, কার্লোসকে স্ত্রী এবং পরিবারের চোখের সামনে সাত বার গুলি করে ১৭ বছর বয়সি এক আততায়ী। সেই ইস্তক ‘জেন জ়ি’-র বিক্ষোভে ক্রমশ উত্তাল হয়েছে মেক্সিকো। প্রেসিডেন্ট শাইনবাউমের মোরেনা পার্টিরঅপসারণ দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা।
গত কাল মেক্সিকোর নানা শহরের রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ। হাতে ব্যানারে লেখা, ‘আমরা সবাই কার্লোস’। জাপানি মাঙ্গা ‘ওয়ান পিস’-এর জলদস্যু পতাকাও নজরে এসেছে, যা বিভিন্ন দেশে সরকার-বিরোধী জেন জ়ি আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে উঠে আসছে। মেক্সিকো সিটিতে বিক্ষোভ থেকে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের গেট ভেঙে ফেলায় সংঘর্ষ বাধে পুলিশের সঙ্গে। জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাস চলে। পুলিশকে বিক্ষোভকারী তরুণরা বলতে থাকেন, “আপনাদের উচিত ছিল এ ভাবেই কার্লোসকে রক্ষা করা।” ওই সংঘর্ষে জখম হয়েছেন শতাধিক পুলিশকর্মী। আহত হয়েছেন ২০ জন সাধারণ মানুষ। ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট শাইনবাউম আগেই প্রশ্ন তুলেছেন এই বিক্ষোভের উদ্দেশ্য নিয়ে। এর নেপথ্যে বিরোধী দলগুলির ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি বিদেশি চক্রান্তের অভিযোগও করেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘সমাজমাধ্যম বট’ ব্যবহার করে কৃত্রিম ভাবে ধুয়ো দেওয়া হয়েছে বিক্ষোভে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)