Advertisement
E-Paper

সারা বছরে মাত্র ৩৫ খুন, আর কয়েক মিনিটেই ৪৯ জনকে হত্যা! বাকরুদ্ধ নিউজিল্যান্ড

সারা বছরে বড় ধরনের কোনও খুন, চুরি-ডাকাতির সংখ্যা হাতে গোনা, বিরল ঘটনাও বলা যেতে পারে। সেই কারণেই শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় নিউজিল্যান্ড দু’নম্বরে। সবার শীর্ষে আইসল্যান্ড। তার পরই নিউজিল্যান্ড।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৯ ১৯:৪৮
ক্রাইস্টচার্চে বন্দুকবাজের হামলায় আহত এক জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। ছবি: এপি

ক্রাইস্টচার্চে বন্দুকবাজের হামলায় আহত এক জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। ছবি: এপি

সার বছরে খুন মাত্র ৩৫। এ হেন শান্তির স্বর্গোদ্যানেই কয়েক মিনিটের মধ্যে ৪৯ জনকে নৃশংস হত্যা। এ রকম নারকীয় হত্যালীলা এর আগে কখনও দেখেনি নিউজিল্যান্ড। অনেকেই প্রথম দিকে বিশ্বাসই করতে চাননি, এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে তাঁদের দেশে। তাই কিউইদের কাছে কালো দিন তো বটেই, এ যেন কল্পনারও অতীত।

নিউজিল্যান্ডের অতীত ইতিহাসও চিরশান্তির সাক্ষী। দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ৫০ লক্ষ। ছবির মতো এই দেশে অপরাধের রেকর্ড অত্যন্ত কম। সারা বছরে খুন, চুরি-ডাকাতির সংখ্যা হাতে গোনা, বিরল ঘটনাও বলা যেতে পারে। সেই কারণেই শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় নিউজিল্যান্ড দু’নম্বরে। সবার শীর্ষে আইসল্যান্ড। তার পরই নিউজিল্যান্ড।

নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালে শান্তিপ্রিয় দেশের একটি তালিকা। তার সঙ্গে অপরাধের পরিসংখ্যানও প্রকাশ করে ওই পত্রিকা। তাতেই উঠে আসে, ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডে মাত্র ৩৫টি খুনের ঘটনা রেকর্ড হয়েছে। অর্থাৎ খুনের ঘটনা প্রায় বিরল নিউজিল্যান্ডে। আর গুলি করে খুন আরও বিরল। গত এক দশকে গুলি করে খুনের সংখ্যা দুই অঙ্কেও পৌঁছয়নি। ২০০৯ সালে গুলি করে এক সঙ্গে ৯ জন খুনের ঘটনা ঘটে। তবে সেটাও ছিল ব্যক্তিগত বিবাদের জের। এই ঘটনা বাদ দিলে এই রকম গণহত্যা আর দেখেনি নিউজিল্যান্ড।

আরও পড়ুন: ক্রাইস্ট চার্চ হামলার কোনও তথ্য মিস করলেন না তো! ঝালিয়ে নিন আপনার জ্ঞানভাণ্ডার

আরও পড়ুন: শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য, মুসলিম বিদ্বেষ আর ঘৃণার চরম মতাদর্শে বিশ্বাসী অস্ট্রেলীয় বন্দুকবাজ

কিউয়িরা যে কতটা শান্তিপ্রিয়, তা আরও স্পষ্ট হবে অন্য একটি পরিসংখ্যানে। খুনের সংখ্যা এ রকম বিরল হলেও বন্দুক রয়েছে নিউজিল্যান্ডের প্রায় প্রতি বাড়িতেই। একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে, ৫০ লক্ষ মানুষের মধ্যে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষের হাতে বন্দুকের লাইসেন্স রয়েছে। ২০০৯ সালে ওই ঘটনার পর বন্দুকের লাইসেন্স নীতিতে কিছু পরিবর্তন হওয়ার পরও এই সংখ্যা। এত মানুষের হাতে বন্দুক থাকা সত্ত্বেও খুনের সংখ্যা হাতে গোনা— এ থেকেই পরিষ্কার, সেখানকার বাসিন্দাদের শান্তিপ্রিয় মানসিকতা।

আরও পড়ুন: নিউজিল্যান্ডের মসজিদে নির্বিচারে গুলি বন্দুকবাজের, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯, আহত ২০

হামলা হয়েছে মসজিদে, যেখানে মুলত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের যাতায়াত। অথচ নিউজিল্যান্ডে মোট জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশ মুসলিম। তার মধ্যেও আবার চার ভাগের তিন ভাগই অন্য দেশ থেকে যাওয়া, অর্থাৎ জন্মসূত্রে নিউজিল্যান্ডের নাগরিক নন। তবু সেখানেই এমন বন্দুকবাজের হামলা। হামলার পর তাই নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন বলেন, ‘‘এই হামলায় নিহতরা শরণার্থী হতে পারেন। হতে পারেন তাঁরা উদ্বাস্তু। কিন্তু তাঁরা নিউজিল্যান্ডকে তাঁদের নিজের দেশ, নিজের মাতৃভূমি বলেই মনে করতেন।’’ একই সঙ্গে আর্ডেনের আশ্বাস, ‘‘এই হামলায় সেই মর্যাদা, সেই জাত্যাভিমানে বিন্দুমাত্রও চিড় ধরবে না।’’

(আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক চুক্তি, আন্তর্জাতিক বিরোধ, আন্তর্জাতিক সংঘর্ষ- সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)

New Zealand Christchurch Terrorist Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy