Advertisement
E-Paper

‘ফ্যাসিবাদ চলবে না’, ট্রাম্পের খামখেয়ালিপনার বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত, ক্ষোভ উগরে পথে আমেরিকানরা

ক্ষমতায় আসার পর একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর নীতির বিরুদ্ধে শনিবার আমেরিকার রাস্তায় বহু মানুষ জমায়েত করেছেন। স্লোগানে, মিছিলে ছেয়ে গিয়েছে নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন, ম্যানহাটনের রাস্তা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:১৪
Protest against Donald Trump floods the streets of US cities

লস অ্যাঞ্জেলেসের রাস্তায় শনিবার ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভ, জমায়েত। ছবি: রয়টার্স।

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হিসাবে আমেরিকার কুর্সিতে বসেছেন তিন মাসও পূরণ হয়নি। তার মধ্যেই তাঁকে ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দিকে দিকে। ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার আমেরিকান। শনিবার (স্থানীয় সময়) সকাল থেকে ভিড় উপচে পড়েছে নিউ ইয়র্ক, কলোরাডো, হিউস্টন, লস অ্যাঞ্জেলেস, এমনকি খাস ওয়াশিংটনের রাস্তাতেও! ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মিছিল করছেন মানুষ। আমেরিকার ৫০টি প্রদেশের অন্তত ১২০০টি এলাকায় শনিবার মিছিল এবং জমায়েত হয়েছে। বার্তা একটাই, ‘‘আমেরিকার কোনও রাজা নেই। আমেরিকায় ফ্যাসিবাদ চলবে না।’’ ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর এটাই আমেরিকায় সবচেয়ে বড় বিরোধী বিক্ষোভ।

ক্ষমতায় আসার পর একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। প্রশাসনে পর পর কর্মীছাঁটাই থেকে শুরু করে অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানো, মার্কিন নাগরিকত্বের জন্য নতুন নিয়ম চালু কিংবা অতি সম্প্রতি তাঁর শুল্কনীতি— শুধু আমেরিকায় নয়, সারা বিশ্বে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। যে কারণে শনিবার আমেরিকার বাইরে কোথাও কোথাও বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। ট্রাম্প-বিরোধী মিছিল বেরিয়েছে লন্ডন এবং বার্লিনেও।

লস অ্যাঞ্জেলেসে ট্রাম্প-বিরোধী জমায়েত।

লস অ্যাঞ্জেলেসে ট্রাম্প-বিরোধী জমায়েত। ছবি: রয়টার্স।

ম্যানহাটনে ট্রাম্প-বিরোধী মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে এক প্রতিবাদী বলেন, ‘‘আমার ভীষণ ভীষণ রাগ হচ্ছে। বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত একদল মানুষ নিজেদের ইচ্ছামতো আমাদের দেশটাকে চালাচ্ছেন। আমাদের দেশ আর মহান নেই।’’ ওয়াশিংটনের রাস্তায় স্লোগান দিতে দিতে এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘নিউ হ্যাম্পশায়ার থেকে বাসে করে আমরা প্রায় ১০০ জন এখানে প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। এই প্রশাসনের জন্য বিশ্ব জুড়ে বন্ধুদের হারাচ্ছি আমরা। সকলের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। দেশের মধ্যেও তারা বিভাজন তৈরি করছে। আমাদের সরকারকে ওরা ধ্বংস করে দিচ্ছে।’’ ক্ষমতায় আসার পর গর্ভপাত বিরোধী নীতি গ্রহণ করেছিলেন ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে লস অ্যাঞ্জেলেসে এক তরুণীর হাতে প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। তাতে লেখা ছিল, ‘‘আমার গর্ভ থেকে বেরিয়ে যাও।’’ বস্টনের এক প্রতিবাদী সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘আমরা এখানে ফ্যাসিবাদ বন্ধ করার জন্য জড়ো হয়েছি। বিরোধীদের, অভিবাসীদের নির্বিচারে উনি জেলে ভরে দিচ্ছেন। সেই নেতাকে আমরা থামাতে চাই।’’

সবচেয়ে বড় প্রতিবাদী জমায়েত দেখা গিয়েছে রাজধানী ওয়াশিংটনেই। হোয়াইট হাউস থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে ন্যাশনাল মলে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছেন। দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিবাদ জানাতে রাজধানীতে এসেছেন অনেকে। তাঁদের ট্রাম্প-বিরোধী স্লোগানে মুখরিত হয়েছে রাস্তাঘাট। কিছু সংগঠনের হিসাব বলছে, শুধু ওয়াশিংটনেই ২০ হাজার মানুষ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জমায়েতে শামিল হয়েছেন। কোনও কোনও রিপোর্টে দাবি, সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

লন্ডনের রাস্তায় ট্রাম্প-বিরোধী মিছিল থেকে এক মহিলা বলেন, ‘‘আমেরিকায় যা হচ্ছে, সেটা সকলের সমস্যা। আমরা তাই প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছি। অর্থনীতি নিয়ে ট্রাম্প পাগলামি করছেন। গোটা পৃথিবীকে উনি মন্দার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।’’ বার্লিনের রাস্তায় ৭০ বছরের এক বৃদ্ধের কথায়, ‘‘সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি করেছেন ট্রাম্প। উনি পাগল হয়ে গিয়েছেন।’’

ট্রাম্প অবশ্য কোনও বিরোধিতায় আপাতত কান দিচ্ছেন না। হোয়াইট হাউসে বসে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আমার নীতি কখনও বদলাবে না।’’ সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের পণ্যে ‘পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপ করেছেন ট্রাম্প। ভারতীয় পণ্যে নেওয়া হবে ২৬ শতাংশ শুল্ক। এর ফলে আমেরিকার অর্থনীতি ভেঙে পড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। ট্রাম্পের নীতির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে গোটা বিশ্বের বাণিজ্যে। ইতিমধ্যে আমেরিকার পণ্যে চিন পাল্টা শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছে।

Donald Trump US
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy