শপথের পরে নরেন্দ্র মোদীর শুভেচ্ছাবার্তার জবাবে ইমরান খান জানিয়েছিলেন, তিনি পাঠানের ছেলে। সত্যি কথা বলেন, খাঁটি কাজ করেন। পুলওয়ামা হানার পরে সে কথার প্রমাণ চেয়েছিলেন মোদী। তার জবাবে ‘শান্তিকে একটা সুযোগ দিতে’ মোদীকে অনুরোধ করলেন ইমরান।
গতকাল ইমরান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর উচিত শান্তিকে একটা সুযোগ দেওয়া। আমি আশ্বাস দিচ্ছি, পুলওয়ামা নিয়ে সঠিক গোয়েন্দা-তথ্য দিলে আমরা পদক্ষেপ করব।’’ এরই মধ্যে আজ উত্তেজনার আবহকে সঙ্গী করেই ফের চালু হল শ্রীনগর-মুজফ্ফরাবাদ বাস পরিষেবা।
২০০৫ সালে শুরু হওয়া ‘কারবাঁ-এ-আমন’ বাস পরিষেবার ফলে ১৯৪৭ সালে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বহু কাশ্মীরি ফের পরিজনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষ-উত্তেজনার ফলে মাঝে মাঝেই বন্ধ রাখতে হয়েছে পরিষেবা। পুলওয়ামা হামলার পরে গত সপ্তাহে পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। আজ ফের শ্রীনগরের বেমিনা এলাকা থেকে ৩৩ জন যাত্রীকে নিয়ে রওনা হয় বাস। উরির কাছে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনার কামান পোস্টে পৌঁছে অন্য একটি বাসে চড়ে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে যান তাঁরা। একইভাবে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে এসেছেন ২১ জন যাত্রী।
আরও পড়ুন: ‘দেশে যুদ্ধ লাগিয়ে উনি শান্তি পুরস্কার নিচ্ছেন!’ মোদীকে কটাক্ষ মমতার
কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদের বিরুদ্ধে আর্জির শুনানি নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না কাশ্মীরে। ২৬-২৮ ফেব্রুয়ারি ওই আর্জির শুনানি হবে বলে আজ জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিজেপি সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত এই অনুচ্ছেদ খারিজের পক্ষে সওয়াল করতে পারে বলে সম্প্রতি দাবি করে নানা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার পাশাপাশি এ নিয়েও আতঙ্ক ছড়ায় কাশ্মীরে। কিন্তু গতকাল রাজ্যপালের প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, এ নিয়ে অবস্থান স্থির করতে পারে একমাত্র রাজ্যের নির্বাচিত সরকার। সে কথাই ফের সুপ্রিম কোর্টে জানাবে তারা। আজ ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা দাবি করেন, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্যপালের উচিত এখনই রাজ্যে নির্বাচনের আয়োজন করা। তবেই ৩৫এ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে অবস্থান স্থির করা সম্ভব।’’ অন্য দিকে ৩৫এ ধারা খারিজ বা তাতে কোনও পরিবর্তন হলে কাশ্মীরে ‘দীর্ঘস্থায়ী’ আন্দোলন শুরু করতে হুরিয়তকে অনুরোধ করেছে হিজবুল মুজাহিদিন। হিজবুল কম্যান্ডার রিয়াজ নাইকুর দাবি, ‘‘ছাত্রদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত বা অন্য কোনও কারণ দেখিয়ে ওই আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। মনে রাখতে হবে কাশ্মীরি পড়ুয়াদের উপরে দেশের নানা প্রান্তে হামলা চালিয়েছে বিজেপি-আরএসএস। কাশ্মীরি হওয়াই ছিল তাদের একমাত্র অপরাধ।’’