Advertisement
E-Paper

রাশিয়ায় বসে ভারত-সহ ৫০টি দেশে প্রতারণা! আন্তর্জাতিক চক্রের ফাঁদে এক লাখ মানুষ

বিনিয়োগের টোপ দিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা হত সাধারণ মানুষকে। ভারত, ব্রিটেন, কানাডা-সহ একাধিক দেশে এই ধরনের প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়েছিল বলে দাবি রাশিয়ার তদন্তকারী সংস্থার।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:০৫
রাশিয়ান তদন্তকারী সংস্থার অভিযানে মিলল আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের খোঁজ।

রাশিয়ান তদন্তকারী সংস্থার অভিযানে মিলল আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের খোঁজ। — প্রতীকী চিত্র।

রাশিয়ায় বসে ভুয়ো কল সেন্টারের মাধ্যমে ভারত-সহ প্রায় ৫০টি দেশে প্রতারণার ফাঁদ পাতার অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় সোমবার ভুয়ো কল সেন্টার সংস্থার ১১ জন কর্মীকে আটক করেছে রাশিয়ার তদন্তকারী সংস্থা ফেডারাল সিকিউরিটি সারভিস (এফএসবি)। সব মিলিয়ে এক লাখের বেশি মানুষকে আর্থিক ভাবে প্রতারিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রথমে, অতিরিক্ত মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে বিনিয়োগের টোপ দেওয়া হত। এক বার সেই ফাঁদে পা দিলেই টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত বলে অভিযোগ। যার মাধ্যমে ভুয়ো কল সেন্টারগুলি এক এক দিনে প্রায় ১০ লাখ ডলার উপার্জন করত বলে দাবি করা হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জর্জিয়ার এক প্রাক্তন মন্ত্রীরও যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ করছে রাশিয়ার তদন্তকারী সংস্থা।

রাশিয়ার তদন্তকারী সংস্থা এফএসবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই ভুয়ো কল সেন্টারগুলির সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্তরের এক সংগঠিত অপরাধ চক্র জড়িত রয়েছে। ভারত, ব্রিটেন, কানাডা, ব্রাজ়িল, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি-সহ আরও বেশ কিছু দেশের সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করা হয়েছে এই জালিয়াতি চক্রের মাধ্যমে। রয়টার্স অনুসারে, এফএসবি আরও জানিয়েছে, এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জর্জিয়ার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডেভিড কেজ়েরাশভিলির যোগ রয়েছে। তিনি বর্তমানে লন্ডনে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন বলে দাবি রাশিয়ান তদন্তকারী সংস্থার। রয়টার্সের তরফে জর্জিয়ার প্রাক্তন মন্ত্রীর এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এ বিষয়ে। তবে তিনি এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

কেজ়েরাশভিলি ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জর্জিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সময়ে জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন মিখায়েল সাকাশভিলি। ‘মিল্টন গ্রুপ’ নামে একটি সংস্থা রয়েছে কেজ়েরাশভিলির। জর্জিয়ার প্রাক্তন মন্ত্রী এবং তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে এর আগেও আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতারণায় যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে বিতর্কও ছড়িয়েছে অতীতে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ বিষয়ে ২০২০ সালে একটি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন জর্জিয়ার প্রাক্তন মন্ত্রী। সম্প্রতি ওই মামলায় কেজ়েরাশভিলির পক্ষে রায় গিয়েছে।

সাইবার অপরাধের বাড়বাড়ন্ত রুখতে ভারত সরকারও সম্প্রতি দেশের সাধারণ মানুষকে আরও বেশি করে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সাইবার অপরাধ নথিভুক্তির পোর্টাল (এনসিআরপি)-র তথ্য অনুসারে গত কয়েক বছরে সাইবার অপরাধের প্রবণতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৭ লাখ ৪০ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। ২০২৩ সালে গোটা বছরে অভিযোগ জমা হয়েছিল সাড়ে ১৫ লাখের কিছু বেশি। ২০২২ সালে অভিযোগ জমা পড়েছিল সাড়ে ন’লাখের কিছু বেশি। ২০২১ সালে ছিল তা ছিল সাড়ে ৪ লাখ। গত তিন বছরের পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়, উদ্বেগ কতটা গুরুতর।

সরকারি হিসাব অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ১২০ কোটি ৩০ লাখ টাকার ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই সময়ের মধ্যে লগ্নির টোপ দিয়ে প্রতারণা হয়েছে ২২২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার। বন্ধুত্বের অ্যাপ থেকে প্রতারণা হয়েছে ১৩ কোটি ২৩ লাখ টাকার। পাশাপাশি শেয়ার বাজার সংক্রান্ত সাইবার প্রতারণাতেও প্রচুর মানুষ টাকা খুইয়েছেন। ট্রেডিংয়ের টোপে ১৪২০ কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে।

Fake Call Centre Russia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy