পপ দুনিয়ার জনপ্রিয় তারকা শন কোম্বজ়কে সম্প্রতি ৫০ মাসের কারাবাসের সাজা শুনিয়েছে নিউ ইয়র্ক প্রদেশের একটি নিম্ন আদালত। সঙ্গে ৫ লক্ষ ডলার জরিমানাও হয়েছে তাঁর। সঙ্গীতের দুনিয়ায় ‘ডিডি’ নামেই পরিচিত ৫৫ বছরের এই প্রাক্তন র্যাপার। যৌন পেশা সংক্রান্ত অপরাধ এবং নিজেরই দুই প্রাক্তন প্রেমিকাকে শারীরিক নির্যাতনে অভিযুক্ত শন দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন কিছু দিন আগে। সম্প্রতি সেই মামলার সাজা ঘোষণা হয়। শনকে কারাবাসের সাজা শুনিয়েছেন যে বিচারক, ভারতীয় বংশোদ্ভূত সেই অরুণ সুব্রহ্মণ্যনকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে।
৪৫ বছরের অরুণ আমেরিকার পেনসিলভেনিয়া প্রদেশের পিটসবার্গে জন্মেছেন। তবে তাঁর শিকড় ছড়িয়ে দক্ষিণ ভারতে। তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান অরুণ। তাঁর বাবা-মা ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। সত্তরের দশকে তামিলনাড়ু থেকে অরুণের পরিবার কাজের সূত্রে আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিল। তার পর থেকে এ দেশেরই বাসিন্দা হয়ে যায়সুব্রহ্মণ্যন পরিবার। বরাবরই ছেলের পড়াশোনার উপরে জোর দিতেন অরুণের বাবা-মা। প্রথমে ওহায়োর ‘কেস ওয়েস্টার্ন রিজ়ার্ভ’ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে স্নাতক হন অরুণ। এর পাশাপাশি, ২০০৪ সালে কলম্বিয়া থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। ২০২৩ সালে তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জেলা আদালতের বিচারক হিসেবে অরুণকে নিয়োগ করেছিলেন। আমেরিকার বিচারবিভাগের ইতিহাসে ফেডেরাল বেঞ্চের কনিষ্ঠতম বিচারকদের মধ্যে অরুণ অন্যতম। বর্তমানে নিউ ইয়র্ক প্রদেশের সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট আদালতের বিচারক হিসেবে কর্মরত তিনি।
শনকে সাজা শোনানোর সময়ে বিচারক অরুণ যে সব মন্তব্য করেছেন, তা নিয়েই আপাতত চর্চা চলছে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে। শনের দুই প্রাক্তন সঙ্গিনী, ক্যাসি ভেন্টুরা এবং জেন তাঁর বিরুদ্ধে গার্হ্যস্থ হিংসার মামলা দায়ের করেছিলেন। প্রথমে ক্যাসি মামলা দায়ের করেন। সেই সময়ে শন তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে জেন নামে অপর সঙ্গিনীর প্রতিও একই ধরনের অত্যাচারে অভিযুক্ত হন শন। বিচারক অরুণ সাজা শোনানোর সময়ে সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘‘অভিযুক্ত মুক্তি পাওয়ার পরেও ফের একই অপরাধ ঘটাবে না, তা নিয়ে আদালত একেবারেই আশ্বস্ত নয়।’’ এর পরেই ক্যাসি এবং জেন যে ভাবে এগিয়ে এসে শনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তার প্রশংসা করেছেন অরুণ। তিনি বলেছেন, ‘‘আপনারা অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অসীম সাহস দেখিয়েছেন।’’ নিজের পর্যবেক্ষণে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই বিচারক আরও জানিয়েছেন, এই মামলার রায় এমন হওয়া উচিত যাতে গার্হ্যস্থ হিংসার শিকার প্রতিটি নারী এটা বিশ্বাস করতে পারেন যে, তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া সব অন্যায়কে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)