বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ আচমকাই ছুটিতে গিয়েছেন! দু’সপ্তাহের ছুটিতে বাংলাদেশ ছেড়েছেন তিনি। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে গত রবিবারই ঢাকা ছেড়েছেন মারুফ। দুবাই হয়ে ইসলামাবাদ যাওয়ার কথা তাঁর। শেখ হাসিনা পরবর্তী জমানায় বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সম্পর্ক মসৃণ করতে কার্যকরী ভূমিকায় ছিলেন তিনি। তাঁর এই মারাত্মক ‘সক্রিয়’ ভূমিকার জন্য বাংলাদেশেও যথেষ্ট আলোচিত মারুফ। সেই ‘অতিসক্রিয়’ পাক কূটনীতিক হঠাৎ কেন ছুটিতে গেলেন, তা নিয়ে বিবিধ জল্পনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের অন্দরেই।
বাংলাদেশের প্রচলিত রেওয়াজ অনুসারে কোনও দেশের রাষ্ট্রদূত কর্তব্যরত অবস্থায় ছুটিতে গেলে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রককে সে বিষয়ে জানিয়ে রাখেন। তিনি কত দিনের ছুটি নিচ্ছেন, ওই সময়ে কে দায়িত্বে থাকবেন, তা বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রককে জানাতে হয়। মারুফ গত রবিবার বাংলাদেশ ছাড়েন এবং সেই দিনই পাকিস্তানি হাই কমিশনের তরফে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রককে বিষয়টি জানায়। পাক রাষ্ট্রদূতের ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি মঙ্গলবার ‘প্রথম আলো’-কে জানান বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিক।
‘প্রথম আলো’ সূত্রে খবর, মুহাম্মদ ইউনূসের বিদেশ মন্ত্রককে পাক হাই কমিশন জানিয়েছে, ১১ মে থেকে ছুটিতে থাকবেন মারুফ। ওই সময়ে দায়িত্বে থাকবেন ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানি উপরাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আসিফ। কিন্তু কত দিনের জন্য মারুফ ছুটিতে থাকবেন, তা প্রথমে ঢাকাকে জানানো হয়নি বলে দাবি ওই সূত্রের। পরে পাক হাই কমিশনের তরফে জানানো হয়, দু’সপ্তাহের জন্য ছুটিতে থাকবেন মারুফ। তবে আচমকা কেন তিনি ১৫ দিনের জন্য ছুটি নিয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। এই নিয়ে বাংলাদেশের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, মারুফের হঠাৎ ছুটিতে যাওয়ার কারণ ঘিরে বিভিন্ন জল্পনাও দানা বাঁধতে শুরু করেছে বাংলাদেশে।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত হিসাবে দায়িত্বে আসেন মারুফ। তিনি ঢাকায় পাক রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার ছ’মাস যেতে না যেতেই হাসিনা বিরোধী আন্দোলন দানা বাঁধে বাংলাদেশে। হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ককে উন্নত করতে ‘অত্যন্ত সক্রিয়’ ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক থেকে শুরু করে পাকিস্তানি আধিকারিকদের বাংলাদেশ সফরের ব্যবস্থা করা-সহ বিভিন্ন দায়িত্বে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি এই সময়ে।
এ হেন ‘অতিসক্রিয়’ কূটনীতিকের হঠাৎ ছুটিতে যাওয়া ঘিরে কৌতূহল দানা বেঁধেছে বাংলাদেশি জনতার মনে। মারুফ ছুটিতে গিয়েছেন, না কি তাঁকে কোনও কারণে পাকিস্তানে ডেকে পাঠানো হয়েছে, তা-ও স্পষ্ট নয়। তাঁকে কি অতিরিক্ত কোনও দায়িত্ব দেওয়া হবে, না কি বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।