দু’দিনেই বাড়ল তাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংঘাত। কম্বোডিয়ার হামলায় আজ তাইল্যান্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ হয়েছে। জখম বহু। সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অন্তত ১ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালিয়েছে। পরিস্থিতি গুরুতর হলে এ বার যুদ্ধ ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দিলেন তাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ফুথাম উইচায়াচাই। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘উত্তেজনা আরও বাড়লে যুদ্ধ ঘোষণা করা হতে পারে।’’ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘প্রতিবেশী হিসেবে বিষয়টা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু এখন পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে তাই-সেনাকে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ যদিও দিনের শেষে খবর, মালয়েশিয়ার হস্তক্ষেপে সংঘর্ষ বিরতির জন্য আলোচনায় বসতে পারে তাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া। বিষয়টি নিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠক ডেকেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা কাউন্সিলও।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত নিয়ে মতবিরোধ চলছে। ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের আদালতে এ নিয়ে সমঝোতা চুক্তি হয়। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে ফের নতুন করে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তা চরম রূপ নেয়। কম্বোডিয়ার হামলায় অন্তত ১১ জন তাই-নাগরিকের মৃত্যু হয় গতকাল। পাল্টা হামলা চালায় তাই-সেনা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুরোদস্তুর যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাইল্যান্ডের অভিযোগ, গতকাল থেকে যুদ্ধবিমান উড়িয়ে, ভারী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, ট্যাঙ্কার নামিয়ে যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছে কম্বোডিয়া। সীমান্তবর্তী অন্তত ১২টি প্রদেশ থেকে প্রচুর মানুষ আতঙ্কে ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে। তবে তাদের দেশের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে কোনও তথ্য দেয়নি কম্বোডিয়া।
তবে আজ দিনের শেষে খবর মিলেছে, মালয়েশিয়ার নেতৃত্বে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির কথা হতে পারে। তাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া— দুই দেশের প্রশাসন সেই খবর নিশ্চিত করেছে। বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সংগঠন এএসইএএন-এর নেতৃত্বে রয়েছে মালয়েশিয়া। তাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া— দুই দেশই ওই সংগঠনের সদস্য। ফলে উত্তেজনা কমাতে এগিয়ে এসেছে মালয়েশিয়া। তাই-বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নিকর্নদেজ় বালানকুরা বলেন, মালয়েশিয়ার হস্তক্ষেপের পরে আক্রমণের তীব্রতা কমেছে। কম্বোডিয়া সদর্থক বার্তা দিলে তারা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
এই উত্তপ্ত ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শুক্রবার তাইল্যান্ডে সফররত ভারতীয় পর্যটকদের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে ভারত। ব্যাঙ্ককের ভারতীয় দূতাবাস এক নির্দেশিকায় কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন সাতটি তাই প্রদেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। পরবর্তী নির্দেশিকার জন্য এক্স হ্যান্ডলে চোখ রাখতে বলা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)