সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে দুই সেনার গুরুতর আহত হওয়ার পরেই পড়শি দেশ কম্বোডিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি মুলতুবি রাখার কথা ঘোষণা করল তাইল্যান্ড। সোমবার ব্যাঙ্ককের এই ঘোষণার পরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নতুন করে অশান্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত ২৬ অক্টোবর মালয়েশিয়া আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে তাইল্যাল্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে স্থায়ী সংঘর্ষবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বকে পাশে বসিয়ে শান্তিচুক্তিতে সই করিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘এই দিনটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সকল মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’’ কিন্তু তিন সপ্তাহের মধ্যেই ট্রাম্পের ‘সাফল্য’ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়ে গেল। কম্বোডিয়া সরকার তাইল্যান্ডের চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে এর আগে সীমান্তে নতুন মাইন পুঁতে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছিল কম্বোডিয়া।
বিতর্কিত ‘পান্না ত্রিভুজ’-এর দখলদারি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে টানাপড়েন চলছে ব্যাঙ্কক-নম পেনের মধ্যে। তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া এবং আর এক পড়শি দেশ লাওসের সীমান্তবর্তী ওই ভূখণ্ডের দখল নিয়ে ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক আদালত (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস বা আইসিজে) যে রায় দিয়েছিল, তা অনেকটা কম্বোডিয়ার পক্ষেই গিয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসের শেষপর্বে কম্বোডিয়া সেনা সেখানে শিবির ও পরিখা নির্মাণের তৎপরতা শুরু করার পরে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। জুলাইয়ের গোড়ায় সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া— দুই দেশের সেনাবাহিনী। তাতে দু’তরফেরই বেশ কয়েক জন সেনা ও অসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছিলেন। আতঙ্কে ঘরছাড়া হয়েছিলেন, সীমান্তবর্তী এলাকার কয়েক হাজার নাগরিক। জুলাইয়ের শেষপর্বে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট এবং তাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাইকের উপস্থিতিতে সাময়িক সংঘর্ষবিরতি সমঝোতা হয়েছিল।