E-Paper

লেক লেমানের জলে মা দুর্গার প্রতিচ্ছবি

দুর্গোৎসব মানেই কেবল প্রতিমা নয়, এ যেন এক অন্নভোজের মহোৎসবও। আগমনীর বিশ্বাস ‘যথা অন্ন তথা মন’, তুমি যা খাও, তাই তুমি। আবার প্রাচীন শ্লোক বলছে “অন্নং হি প্রানিনাং প্রানঃ” অন্নই জীবের প্রাণ।

রিমি রায় চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:২৬
আগমনীর অনন্য প্রচেষ্টা শুধু দুর্গাপুজোকেই নয়, বরং সুদূর বিদেশের মাটিতে বাঙালি সংস্কৃতির দীপ্ত উপস্থিতিকে নতুন করে চিহ্নিত করছে।

আগমনীর অনন্য প্রচেষ্টা শুধু দুর্গাপুজোকেই নয়, বরং সুদূর বিদেশের মাটিতে বাঙালি সংস্কৃতির দীপ্ত উপস্থিতিকে নতুন করে চিহ্নিত করছে। —নিজস্ব চিত্র।

লেক লেমানের কোল ঘেঁষে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি নিচ্ছে জেনিভার সদ্যপ্রতিষ্ঠিত সংগঠন আগমনী। এখন একটাই আবেগ— ‘মা আসছেন’। লেক লেমানের শান্ত জলে ভেসে উঠছে বাঙালির উচ্ছ্বাস ও ঐতিহ্য। চতুর্থ বছরেরপূজোর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত আগমনী এ বছর থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে বাংলার প্রাচীন চিত্রশৈলী পটচিত্র। এই শিল্পের মাধ্যমে বাঙালির বর্ণাঢ্য ইতিহাস ও সংস্কৃতির নানা দিক তুলে ধরাই এ বারের অন্যতম আকর্ষণ। জেনিভায় সবচেয়ে পুরোনো পুজো রামকৃষ্ণ মিশনের বেদান্ত সেন্টারের, ওখানে মূর্তি-সহ পুজো হয়ে আসছে সেই ১৯৯৮ সাল থেকে।

তবে দুর্গোৎসব মানেই কেবল প্রতিমা নয়, এ যেন এক অন্নভোজের মহোৎসবও। আগমনীর বিশ্বাস ‘যথা অন্ন তথা মন’, তুমি যা খাও, তাই তুমি। আবার প্রাচীন শ্লোক বলছে “অন্নং হি প্রানিনাং প্রানঃ” অন্নই জীবের প্রাণ। তাই পূজোর আবহে অন্ন যেন আধ্যাত্মিকতার রূপ পায়। একজন বাঙালির কাছে দুর্গাপুজো অসম্পূর্ণ মিষ্টি, আমিষ কিংবা নিরামিষ ভোজন ছাড়া।

আগমনী চেষ্টা করে সেই বাংলার স্বাদকে জেনিভার বুকে তুলে ধরতে। শিশু থেকে প্রবীণ সকলের অংশগ্রহণে পুজোর চারদিন সাজানো হয় নাচ, গান, নাটক ও সাংস্কৃতিক আসরে। আর মণ্ডপের বাইরে জমে ওঠে বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় অংশ— পেটপুজো। দক্ষ হাতে আগমনীর ফুড টিম তৈরি করে এক অনবদ্য মধ্যাহ্নভোজ ও রাত্রিভোজ। বিশেষ করে নবমীর রাতে স্টলের আয়োজন হয় উত্তর ভারতীয়, দক্ষিণ ভারতীয়, ইন্ডো-চাইনিজ় থেকে শুরু করে স্ট্রিট ফুডের বিশাল ভান্ডারে। পঞ্জাবি ছোলে থেকে লখনউয়ের নবাবি পনির, ছোলার ডাল থেকে দাল মাখনি, সবই মেলে এই আন্তর্জাতিক দুর্গোৎসবে।

এত বড় একটি আয়োজন, যেখানে প্রতিদিন শতাধিক মানুষের সমাগম হয়, তার জন্য প্রয়োজন নিখুঁত পরিকল্পনা। তাই জুলাই মাস থেকেই শুরু হয় আয়োজক কমিটির বৈঠক। প্রতিবছরই প্রকাশিত হয় একটি প্রচার ভিডিয়ো, যেখানে সামাজিক বার্তা ধরা পড়ে, যেমন, নারীশক্তির স্বীকৃতি বা কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার বিরুদ্ধে সচেতনতা। আগমনীর এই অনন্য প্রচেষ্টা শুধু দুর্গাপুজোকেই নয়, বরং সুদূর বিদেশের মাটিতে বাঙালি সংস্কৃতির দীপ্ত উপস্থিতিকে নতুন করে চিহ্নিত করছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja Lake Geneva Indian Festival Bengali Festival

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy