Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Donald Trump

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব কার্যকর হতে পারে কি?

২০১৯ সালে ন্যান্সি পেলোসির উদ্যোগে আমেরিকার তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিম্নকক্ষে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প— ফাইল চিত্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্প— ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ১০:৫৪
Share: Save:

আমেরিকার সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট পদে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ আর ১১ দিন। কিন্তু ক্যাপিটলে তাঁর সমর্থকদের হামলার ঘটনার জেরে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইমপিচ করার প্রক্রিয়া শুরু করতে সক্রিয় হয়েছে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভস।

ডেমোক্র্যাট নেত্রী তথা হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ইতিমধ্যেই ক্যাপিটলে হামলায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করা বিষয়ে বার্তা দিয়েছেন। শুক্রবার ডেমোক্র্যাট হাউস মেম্বারদের এক সভায় তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ব্যবস্থা নিতেই হবে।’’ যদিও আমেরিকার সংবিধান বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানিয়েছেন, এত কম সময়ের মধ্যে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়া খুবই কঠিন। তবে অসম্ভব নয়।

২০১৯ সালে পেলোসির উদ্যোগেই আমেরিকার তৃতীয় প্রেসিডেন্ট (এ ক্ষেত্রে অন্য দুই উদাহরণ অ্যান্ড্রু জনসন এবং বিল ক্লিনটন) হিসেবে হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসে ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হয়েছিলেন ট্রাম্প। হাউসে সে প্রস্তাব পাশও হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেটে রিপাবলিকান পার্টির গরিষ্ঠতা থাকায় ট্রাম্প জিতে যান। সে বার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, রাজ্যনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন এবং তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক স্তরে দুর্নীতির অভিযোগ আনার জন্য ইউক্রেনের উপর চাপ সৃষ্টির।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

চলতি সপ্তাহে জর্জিয়ায় সেনেটের দু’টি আসনে জিতে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষে গরিষ্ঠতা পেয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। কিন্তু নবনির্বাচিত দুই সেনেটরের আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব নিতে কিছুটা সময় লাগবে। ফলে হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসে পেলোসির প্রস্তাব পাশ হলেও আগামী দেড় সপ্তাহের মধ্যে রিপাবলিকান গরিষ্ঠ সেনেটে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব অনুমোদন করানো ডেমোক্র্যাট শিবিরের পক্ষে খুবই কঠিন বলে আমেরিকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।

বস্তুত, ডেমোক্র্যাট গরিষ্ঠ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসেও ২০ জানুয়ারির মধ্যে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন সে দেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞদের বড় অংশ। কারণ, প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এমন প্রস্তাব আনতে গেলে হাউস জুডিশিয়ারি কমিটিতে বিধিবদ্ধ ভাবে অভিযোগ দায়ের করতে হবে। এর পর তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে রিপোর্ট পাঠানো হবে কমিটিতে। সেই রিপোর্ট জুডিশিয়ারি কমিটি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দিলে হাউসে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক এবং ভোটাভুটির পালা শুরু হবে।

এই প্রক্রিয়ায় জন্য অন্তত তিন মাস সময় প্রয়োজন। ততদিতে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ‘প্রাক্তন’ হয়ে যাবেন। তবে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব এলেই ইতিহাসে ঠাঁই পেয়ে যাবেন ট্রাম্প। সে ইতিহাস আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দু’বার ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হওয়ায়।

আরও পড়ুন: অন্য দেশের পতাকাও ছিল ক্যাপিটলে, দাবি ভারতের পতাকাবাহীর

তবে অন্য একটি অংশ মনে করছে, হাউসে প্রস্তাব পাশ হওয়ার পর সেনেটে তা গেল এই ১১ দিনের মধ্যে তা পাশ করিয়ে নেওয়া তত্ত্বগতভাবে অসম্ভব নয়। এর জন্য দরকার সব ডেমোক্র্যাট সব সদস্যের উপস্থিতির সঙ্গে আরও ১৭ জন রিপাবলিকান সেনেটরের সমর্থন। বাস্তবে যা পাওয়া কঠিন। তবে জুডিশিয়ারি কমিটি পর্যালোচনা কিন্তু বাধ্যতামূলক নয়। সব ডেমোক্যাট সদস্যের সঙ্গে কিছু রিপাবলিকান যদি সম্মত হন, তা হলে তাঁরা জুডিশিয়ারি কমিটিতে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব পর্যালোচনার বিষয়টি এড়িয়ে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া ত্বরান্তিত করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বিতর্ক এবং ভোটাভুটিতেই হাউসে চূড়ান্ত হতে পারে ট্রাম্পের ভাগ্য। তার পর তা সেনেটে যাওয়ার কথা। এখন হাউসে ভোটাভুটির পর সেই প্রস্তাব ক’দিন বাদে সেনেটে পাঠানো যেতে পারে। সেটা হলে তত দিন সেনেটে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাবেন। এবং, তখন তা সেনেট থেকে পাশ করানো সহজ হতে পারে। এমনকী, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হলেও তাঁকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ইমপিচ করা যেতে পারে।

ফলে আপাতত ট্রাম্পের ভাগ্য ঝুলছে সুতোয়।

আরও পড়ুন: বিপদ বুঝে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে নিজেকে কি ক্ষমা করতে চান ট্রাম্প?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE