Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Joe Biden

আমেরিকা ফিরছে তার পুরনো মেজাজে, প্রথম ভাষণে আক্রমণাত্মক বাইডেন

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো ৪৫ মিনিটে ওয়াশিংটনে মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সদর দফতর হ্যারি এস ট্রুম্যান বিল্ডিংয়ে ভাষণ দেন বাইডেন।

জো বাইডেন।

জো বাইডেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:৩১
Share: Save:

বিশ্বে আবার কর্তৃত্ব চায় আমেরিকা। কূটনীতির জোর খাটিয়ে রাশিয়ার আগ্রাসন, চিনের মার্কিন অর্থনীতিকে প্রভাবিত করার প্রবণতায় এ বার রাশ টানতে চায় তারা। মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রথম ভাষণে ঘোষণা করলেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিশ্বের সমস্ত দেশকে সেখান থেকেই বার্তা দিলেন, ‘‘আমেরিকা ইজ ব্যাক’’ অর্থাৎ ‘‘আমেরিকা আবার পুরনো মেজাজে ফিরছে।’’

প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বৃহস্পতিবার প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন বাইডেন। সেখানেই এই ঘোষণা। বার্তা স্পষ্ট। গত চার বছরে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় আমেরিকার যে ‘অবনতি’ হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে হবে। কীভাবে? বাইডেনের কাছে এর সমাধানে প্রথম দু’টি পদক্ষেপ প্রস্তুত। প্রথমত, রাশিয়ার কথা মেনে নেওয়া যাবে না। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রাসী নীতি মেনে নেওয়ার মনোভাব ছাড়তে হবে। দ্বিতীয়ত, মার্কিন অর্থনীতিকে যে ভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে চিন, যে ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তারা, তার জবাবদিহি করতে হবে আমেরিকার কাছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো ৪৫ মিনিটে ওয়াশিংটনে মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সদর দফতর হ্যারি এস ট্রুম্যান বিল্ডিংয়ে ভাষণ দেন বাইডেন। সেখানে প্রথমেই তাঁর রাশিয়া বিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে দেন। রাশিয়ার প্রধান বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালানির প্রসঙ্গ তুলে বাইডেন বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট পুতিনের অমানবিক আচরণ নিয়ে আমেরিকা এতদিন কিছু বলেনি। কিন্তু আর তা চলতে দেওয়া হবে না। পুতিনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে।’’ বাইডেন বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ব্যাপারটা বেশ পরিষ্কার করেই বুঝিয়ে বলেছি। তবে আমার পূর্বসূরির ঢঙে নয়। আমি ওঁকে বলেছি রাশিয়ার ‘হ্যাঁ’-তে ‘হ্যাঁ’ মেলানোর দিন শেষ। মার্কিন নির্বাচনে তাদের হস্তক্ষেপ, আমেরিকার উপর সাইবার আক্রমণ আর মেনে নেবে না আমেরিকা। এমনকী রাশিয়ার নাগরিকদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ, নাগরিকদের উপর বিষ প্রয়োগের ঘটনাও মেনে নেওয়া হবে না। তেমন হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে একবারও ভাববে না আমেরিকা।’’

রাশিয়ার পুতিন বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছিল আমেরিকার বিরুদ্ধে। পরে দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে দেশে ফেরা নাভালনিকে ফের গ্রেফতার করে ক্রেমলিন। নাভালনির মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীদেরও গ্রেফতার করে পুতিন প্রশাসন। বাইডেন তাঁর বক্তৃতায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এর কোনওটাই মেনে নেবে না আমেরিকা।

চিন নিয়েও তাঁর ভাষণে কড়া বার্তা দিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘‘বেজিংয়ের সঙ্গে আমেরিকা কাজ করবে। তবে যখন আমেরিকার প্রয়োজন পড়বে তখনই। তার আগে চিনকে আমেরিকার কাছে জবাবদিহি করতে হবে। আমেরিকার অর্থনীতি, মেধা সম্পদ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করার ব্যাপারে উত্তর দিতে হবে। যেভাবে আমেরিকার চাকরির বাজারের ও বাণিজ্যের ক্ষতি করেছে চিন, তার জবাবদিহি করতে হবে।’’

ট্রাম্প জমানায় ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি চালু ছিল। বাইডেনের কথায় স্পষ্ট, আর ‘প্রথমে আমেরিকা’ নীতিতে হাঁটবে না বাইডেন প্রশাসন। এ বার ‘আমেরিকাই প্রথম’ নীতি চলবে। বাইডেনের কথায়, ‘‘আমি যা করতে চলেছি, তার কেন্দ্রে রয়েছেন আপনারা। আমাদের বিশ্বশক্তির কেন্দ্রে পৌঁছতেই হবে।’’ ট্রাম্পের নানা নীতির জন্য আমেরিকার কূটনীতিকরা উৎসাহ হারিয়েছিলেন। তাঁদের উৎসাহিত করে বাইডেন বলেন, ‘‘দেশের কূটনীতি আবার আগের মেজাজে ফিরবে। তাই এ বার উঠে পড়ে লেগে পড়ুন। আমেরিকাকে তার পুরনো জায়গায় ফেরাতেই হবে।’’

আরও পড়ুন:
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE