Advertisement
E-Paper

রাজকীয় খেতাব হারানোর পর অ্যান্ড্রুর ‘ভবিষ্যৎ’ কী? কী কী সুবিধা পাবেন প্রাক্তন স্ত্রী, কন্যারা? ইঙ্গিত বাকিংহামের

বৃহস্পতিবার রাতে বাকিংহাম প্যালেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাজার ভাই এখন থেকে ‘অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর’ নামে পরিচিত হবেন। অর্থাৎ ‘প্রিন্স’ এবং ‘ডিউক অফ ইয়র্ক’-এর মতো রাজকীয় খেতাব ব্যবহার করতে পারবেন না তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ২০:২৩

—ফাইল চিত্র।

আমেরিকার কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনের সঙ্গে ‘বন্ধুত্ব’ এবং ‘যৌন কেচ্ছায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে’ ভাই অ্যানড্রুর রাজকীয় খেতাব কেড়ে নিয়েছেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস। বাতিল করেছেন, রাজ্য পরিবারের সদস্য হিসেবে অ্যান্ড্রুর প্রাপ্য ভাতা এবং উইন্ডসরে বরাদ্দ রাজকীয় বাসভবন ‘রয়্যাল লজ’-এ বসবাসের অধিকারও। এই পরিস্থিতিতে প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের তৃতীয় সন্তানের পরিবারের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে প্রশ্ন দানা বেঁধেছে ইংল্যান্ডে।

বৃহস্পতিবার রাতে বাকিংহাম প্যালেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাজার ভাই এখন থেকে ‘অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর’ নামে পরিচিত হবেন। অর্থাৎ ‘প্রিন্স’ এবং ‘ডিউক অফ ইয়র্ক’-এর মতো রাজকীয় খেতাব ব্যবহার করতে পারবেন না তিনি। অবশ্য এপস্টিন-বিতর্ক দানা বেঁধে ওঠার পরে চলতি মাসের গোড়ায় অ্যান্ড্রু নিজেই ‘ডিউক অফ ইয়র্ক’ উপাধি ব্যবহার না করার কথা ঘোষণা করেছিলেন।

ব্রিটেনের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ‘রয়্যাল লজ’-এ বসবাসের অধিকার হারালেও অ্যান্ড্রু, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সারা ফার্গুসন এবং তাঁদের দুই কন্যা, বিট্রিস এবং ইউজেনির জন্য রাজপরিবারেরই অন্য একটি প্রাসাদ বরাদ্দ করেছেন চার্লস। যদিও বাকিংহামের বিবৃতিতে সে প্রসঙ্গের উল্লেখ নেই। সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘রয়্যাল লজ ছাড়ার জন্য আনুষ্ঠানিক নোটিস জারি করা হয়েছে এবং তিনি (অ্যান্ড্রু) বিকল্প ব্যক্তিগত বাসস্থানে চলে যাবেন।’’ বস্তুত, বাকিংহামের ওই বিবৃতির ভাষা এতটাই কড়া যা ব্রিটিশ রাজপরিবারের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন বলে জানিয়েছেন বিবিসির প্রাক্তন রাজপরিবার সংক্রান্ত সংবাদদাতা জেনি বন্ড। তিনি মনে করেন, প্রিন্স অফ ওয়েলস অর্থাৎ পুত্র উইলিয়ামের চাপেই ভাই অ্যন্ড্রুর বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করেছেন রাজা চার্লস।

কিন্তু কেন এমন করলেন প্রিন্স উইলিয়াম? বিবিসি জানাচ্ছে, সরাসরি অপরাধমূলক অভিযোগ না থাকলেও এপস্টিন ফাইলে নাম জড়ানোয় অ্যান্ডুর বিরুদ্ধে ব্রিটেনে জনমত তৈরি হচ্ছিল। আর তার ফলে রাজপরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মনে করেছেন রাজা তৃতীয় চার্লসের উত্তরসূরি। ওই খবরে জানানো হয়েছে, অ্যান্ড্রু, সারা এবং তাঁদের দুই কন্যাকে নরফোকের স্যান্ড্রিংহাম এস্টেটে থাকতে দেওয়া হবে (যদিও বাসস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি বাকিংহামের তরফে)। প্রায় ২০ হাজার একর জুড়ে বিস্তৃত এই এস্টেট এবং প্রাসাদ অ্যান্ড্রুর প্রয়াত পিতা ফিলিপের সম্পত্তির অন্তর্গত। সেখানে থাকার খরচ রাজা চার্লস ব্যক্তিগত ভাবে দেবেন বলে রাজপরিবারের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

অ্যান্ড্রুর সঙ্গে বিবাববিচ্ছেদের সময়ই সারা রাজকীয় উপাধি ‘ডাচেস অফ ইয়র্ক’ হারিয়েছিলেন। অ্যান্ড্রু-সারার দুই কন্যা, বিট্রিস এবং ইউজেনি কিন্তু রাজা পঞ্চম জর্জের ১৯১৭ সালের ‘লেটারস পেটেন্ট’ অনুসারে ‘প্রিন্সেস’ উপাধি ব্যবহারের অধিকারী! এমনকি, ‘প্রিন্স’ খেতাব হারালেও ওই নীতি মেনে অ্যান্ড্রু ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের উত্তরাধিকার ক্রমপর্যায় তালিকায় অষ্টম স্থানে থাকবেন। বিট্রিস এবং ইউজেনি থাকবেন নবম এবং দশম স্থানে। তবে রাজকীয় ভাষ্যকার ভিক্টোরিয়া মারফি জানিয়েছেন, রাজপরিবারের কোনও অনুষ্ঠানে ‘সদস্য’ হিসেবে তাঁরা যোগ দিতে পারবেন না।

সরকারি তহবিল থেকে অ্যান্ড্রু এবং সারা এখন কোনও ভাতা পাবে না। তবে রাজা চার্লস ব্যক্তিগত ব্যবহারের রাজকোষ থেতে ভাইকে অর্থসাহায্য করতে পারবেন। যদিও প্রাক্তন সেনাকর্তা ব্যবসায়ী হিসেবে অ্যান্ড্রুও যথেষ্ট অর্থের অধিকারী। চিন এবং পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির ব্যবসায়িক বিনিয়োগের পাশাপাশি একটি ডাচ স্টার্ট-আপ কোম্পানির সঙ্গে সম্প্রতি বন্ধ হওয়া একটি প্রকল্প রয়েছে অ্যান্ড্রুর ব্যক্তিগত সম্পত্তির তালিকায়।

যৌন অপরাধ, নারী পাচারে অভিযুক্ত এপস্টিনের সঙ্গে বহু বিখ্যাত ব্যক্তির নাম জড়িয়েছে। ইতিমধ্যে একাধিক বার কানাঘুষো শোনা গিয়েছে, এপস্টিন ফাইলে নাম রয়েছে বিল ক্লিন্টন থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প, স্টিফেন হকিং থেকে মাইকেল জ্যাকসন-সহ বিশ্বের তাবড় ব্যক্তির। যদিও এই ফাইল এখনও পুরোপুরি প্রকাশ করা হয়নি। ৬৬ বছরের অ্যান্ড্রু অবশ্য বরাবরই বিতর্কিত এক চরিত্র। বছর ছয়েক আগে এপস্টিনের সঙ্গে তাঁর ‘বন্ধুত্বের’ কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন তিনি। ভার্জিনিয়া জিওফ্রে নামের এক ভদ্রমহিলা অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে মামলা করেছিলেন। অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে নাবালিকাদের সঙ্গে জোর করে যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার অভিযোগও ওঠে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ বার বারই অস্বীকার করেছেন ব্রিটিশ রাজকুমার।

Prince Andrew King Charles III King Charles Jeffrey Epstein Buckingham Palace buckingham
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy