প্রতিবাদীদের মিছিল। ইরানে। ছবি: এএফপি।
মক্কায় হওয়া দুর্ঘটনার দায় কার? পুণ্যার্থীদের না কি সৌদি প্রশাসনের? ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরে এখন এই প্রশ্নেই টালমাটাল বিশ্ব। আর সে বাক যুদ্ধে কোণঠাসা সৌদি আরব। এক দিকে যখন নিজেদের কাঁধ থেকে দায় নামাতে সৌদি প্রশাসন দুর্ঘটনার পুরোপুরি দায় চাপাতে ব্যস্ত পুণ্যার্থীদের উপরেই। সৌদি বিরোধী দেশগুলিও এই সুযোগে এক হাত নিতে ছাড়ছে না। এককাট্টা হয়ে তারা আঙুল তুলছে সৌদি প্রশাসনের গাফিলতির উপরেই।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রওহানি বলেন, ‘‘সৌদি আরবের উচিত তাদের গাফিলতি মেনে নেওয়া। আইন এবং ইসলামকে সামনে রেখে গাফিলতির জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে তাদের।’’ তেহরানে এই ঘটনায় প্রতিবাদে সামিল হন কয়েক হাজার জন। তাঁদের দাবি, হজ চালাতে সৌদি আরব একেবারেই ব্যর্থ। দুর্ঘটনার দু’ঘণ্টা পর উদ্ধার কার্য শুরু করা হয়।
সৌদি প্রশাসন অবশ্য এই অভিযোগে খুব একটা আমল দিতে চায়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রী খালিদ অল-ফালিহ বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার তদন্ত হয়েছে। পুণ্যার্থীরা প্রশাসনকে সাহায্য করেননি। সুষ্ঠু ভাবে আচার পালন করার নিয়ম ভেঙেছে তাঁরা। সে কারণেই এই ঘটনা।
অন্য দিকে পুণ্যার্থীদের অভিযোগ, পুলিশের থেকে তেমন সাহায্য মেলেনি। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে এখনও শিউড়ে উঠছেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী মহম্মদ জুনায়েদ আল সিসি বলেন, ‘‘ সারি দিয়ে মৃতদেহ পড়ে ছিল। প্রাণে বাঁচতে যে দিকে চোখ গিয়েছে ছুটেছি। দমবন্ধ হয়ে আসছিল।’’ তাঁর অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতেও মাত্র একটি দরজাই খোলা ছিল। তড়িঘড়ি অন্য দরজাগুলি খুলে দিলে ঘটনাটি হয়ত এতটা মর্মান্তিক রূপ নিত না। উপস্থিত পুলিশও ছিল অনভিজ্ঞ। নিরুপায় পুণ্যার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করে তাঁদের নির্দিষ্ট রাস্তা দেখিয়ে বাইরে বের করে দিলে এমন ঘটনা ঘটত না।
ওই দিনের দুর্ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে গিয়েছেন ৭১৭জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের ১৪জন। ইরানের দাবি, তাদের ৯০ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে প্রায় প্রতিটি দেশের নাগরিকই রয়েছে। শনাক্ত করা যায়নি অনেক মৃতদেহ।
কিন্তু এত বড় পুণ্যার্থী জমায়েতের জন্য কেন প্রস্তুত ছিল না সৌদি প্রশাসন? লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কেন উপযুক্ত সংখ্যায় পুলিশ রাখা হয়নি? এই প্রশ্ন গুলি কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে যখন কয়েক সপ্তাহ আগেই ক্রেন ভেঙে বড় দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেও তো শিক্ষা নিতে পারত তারা।
আর সে কারণেই সৌদি আরব কাছ থেকে ইসলামিক অর্গানাইজেশনের তত্ত্বাবধানে হজের দায়িত্ব হস্তান্তর করার দাবি উঠেছে।
এই সংক্রান্ত আরও খবর:
হজভূমিতে শবের স্তূপ, উল্টো পথে ঢুকে পদপিষ্ট
এ রাজ্যের হজযাত্রীরা সুস্থই আছেন, আশা কমিটির
ঘণ্টাখানেক পরেই রাস্তা কিন্তু স্বাভাবিক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy