হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ বৈঠকের পরেও পুরনো অবস্থান থেকে সরতে নারাজ জ়োহরান মামদানি। নিউ ইয়র্কের নবনির্বাচিত এই মেয়র এখনও মনে করেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক জন ‘ফ্যাসিস্ট’ (ফ্যাসিবাদী) এবং স্বৈরাচারী। শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘এনবিসি নিউজ়’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মামদানি বলেন, “অতীতে আমি (ট্রাম্পকে নিয়ে) যা যা বলেছি, এখনও তা বিশ্বাস করি।”
এই প্রসঙ্গে সবিস্তার ব্যাখ্যা দিয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মামদানি বলেন, “আমার মনে হয় রাজনীতিতে মতপার্থক্যের জায়গাটি নিয়ে আমাদের চুপ করে থাকা উচিত নয়। আবার আমাদের এটাও বোঝা উচিত, মতপার্থক্য দূরে রেখে কোন কোন বিষয় আমাদের এক টেবিলে বসাতে পারে।” তার পরেই ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, “আমি ওখানে কোনও অবস্থান নিতে যাইনি। নিউ ইয়র্কবাসীকে কিছু দেব বলেই গিয়েছিলাম।”
গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছিলেন মামদানি। বৈঠকের পর এক সাংবাদিক মামদানির উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কি এখনও বলবেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একজন ফ্যাসিস্ট (ফ্যাসিবাদী)?’’ মামদানি এর উত্তর দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে থামিয়ে ট্রাম্প বলে ওঠেন, ‘‘আরে ঠিক আছে, ঠিক আছে। তুমি ‘হ্যাঁ’ বলে দিতে পারো। ব্যাখ্যা করার চেয়ে ‘হ্যাঁ’ বলে দেওয়া সহজ। আমি কিছু মনে করব না।’’ প্রসঙ্গত, বামপন্থী ডেমোক্র্যাট নেতা ৩৪ বছরের মামদানি নিউ ইয়র্কের কনিষ্ঠতম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। ৭৯ বছরের ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিয়ে আমেরিকায় কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। কারণ, দু’জনের মধ্যে মতাদর্শগত মতপার্থক্য রয়েছে প্রচুর। বৈঠকের আগে পর্যন্ত একে অপরকে তাঁরা কটাক্ষ করেছেন। এক দিকে মামদানি ট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট বলেছিলেন। অন্য দিকে, ট্রাম্প মামদানিকে ‘পাগল বামপন্থী’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন।
শনিবারের সাক্ষাৎকারে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তারও খানিক ইঙ্গিত দিয়েছেন মামদানি। তিনি জানান, নিউ ইয়র্কের বাসিন্দাদের স্বার্থেই হোয়াইট হাউসের সঙ্গে কাজের সম্পর্ক তৈরি করতে চান। সেই কারণেই রাজনৈতিক মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন মামদানি। মামদানি জানান, বৈঠকে তিনি ট্রাম্পকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, ভোটপ্রচারে জীবনযাত্রার খরচ কমানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টও। ঘটনাচক্রে, মেয়র নির্বাচনে জিতলে নিউ ইয়র্কের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার খরচ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মামদানিও। তাই দু’জনের অভিন্ন প্রতিশ্রুতি এবং তা বাস্তবায়িত করার কথা ট্রাম্পকে জানিয়ে এসেছেন বলে দাবি করেছেন মামদানি।