—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাজারে আনাজ কিনতে গিয়ে বহু দিন ধরেই পকেট পুড়ছে সাধারণ মানুষের। এ বার পেঁয়াজের দাম যন্ত্রণা আরও বাড়াল। শুক্রবার কলকাতায় তার দাম ছিল কেজি প্রতি ৬০-৮০ টাকা।
খোদ ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রকই জানিয়েছে, বিশেষ করে পেঁয়াজ সারা দেশের খুচরো বাজারে গড়ে ৫৭% পর্যন্ত চড়ে গিয়েছে। নয়াদিল্লিতে গত বছরে যার কেজি বিকিয়েছে ৩০ টাকায়, এ বার তা-ই ৪৭ টাকা। কলকাতার ব্যবসায়ী মহলের দাবি, জোগান এতই কম যে কিছু বাজারে দাম ৮০ টাকা পেরিয়েও যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, কেন্দ্রের দাবি মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামাচ্ছে। তবে দেশবাসীর যন্ত্রণা যে কমেনি, সেটা স্পষ্ট। ভোটের মুখে তাই অস্বস্তি বাড়ছে মোদী সরকারেরও। খাদ্যপণ্যের দাম কমাতে কার্যত মরিয়া তারা। বেশ কিছু দিন আগেই চাল-গমের রফতানি নিয়ন্ত্রণ করছে, খোলা বাজারে সস্তায় সেগুলি বিক্রিও করছে। গত অগস্টে দাম এতটা বাড়ার আগেই বাজারে ছাড়তে শুরু করে পেঁয়াজ। দেশীয় জোগান বহাল রাখতে রফতানি শুল্কও বাড়ায়। এই দফায় ফের তারা মাঠে নেমেছে দামে রাশ টানার লক্ষ্যে। শুক্রবার কেন্দ্র জানিয়েছে, ক্রেতাদের স্বস্তি দিতে উদ্বৃত্ত পেঁয়াজ বাজারে ভর্তুকি দিয়ে বিক্রি করবে তারা। ২৫ টাকা কেজিতে তা পাওয়া যাবে।
গম, আটা, ডাল ইত্যাদির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতেও একের পর এক পদক্ষেপ করে চলেছে কেন্দ্র। যেমন, এ দিন অনলাইনে নিলামের প্রক্রিয়ায় একলপ্তে বিক্রির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে ২০০ টন গম কেনার জন্য ই-নিলামে অংশ নিতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। আগে ওই সীমা ছিল ১০০ টন। নতুন ব্যবস্থা চালু হলে নিলামের মাধ্যমে খোলা বাজারে গম বিক্রি ১ লক্ষ টন বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টন করা হবে। বাজারে ডালের জোগান বাড়ানোর জন্য মোজ়াম্বিক থেকে আমদানি করা অড়হড় ডাল বন্দর থেকে দ্রুত ছাড়াতে সে দেশের সরকারের সঙ্গে কথা বলছে কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের সচিব রোহিত কুমার সিংহ। ভারতে গড়ে ডাল উৎপাদিত হয় বছরে ২.৫ কোটি থেকে ২.৭ কোটি টন। আমদানি করতে হয় ২০ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষ টন। সূত্রের খবর, এ বছর বৃষ্টির অভাবে আগের থেকে কম জমিতে ডালের চাষ হয়েছে। তাই সতর্ক সরকার।
এ বছর বর্ষা অনিয়মিত হওয়ায় সব মহলেই কৃষি ফলন কমার আশঙ্কা ছিল। কারণ, চাষের কাজ ধাক্কা খেয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের খবর, সেটাই হয়েছে। কোথাও অতিবৃষ্টি, কোথাও বা অনাবৃষ্টি পেঁয়াজ, গম এবং ডালের উৎপাদন ব্যহত করেছে। বৃষ্টির ঘাটতিতে খরিফ মরসুমে পেঁয়াজের চাষ শুরু করতে দেরি হয়েছে। ফলে বাজারে তা এত দিনে চলে আসার কথা থাকলেও আসেনি। অন্য দিকে রবি মরসুমের যে পেঁয়াজ মজুত করা ছিল, তা শেষ হওয়ার মুখে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজ়েশনের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্র নাথ কোলে বলেন. “এক দিকে রবি চাষের পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষ। অন্য দিকে চাষ দেরিতে শুরু হওয়ায় খরিফের পেঁয়াজ বাজারে আসতে দেরি হচ্ছে। ফলে তার চাহিদা এবং তার জোগানের মধ্যে ফারাক অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এর জেরেই বাড়ছে দাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy