Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus Lockdown

করোনার ধাক্কায় দারিদ্রের মুখে ৪০ কোটি ভারতীয়

করোনার তাণ্ডবে শুধু ২০২০ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে সারা বিশ্বে কাজের সময় মার যাবে ৬.৭%।

আইএলও-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারা পৃথিবীতে অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন প্রায় ২০০ কোটি জন।

আইএলও-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারা পৃথিবীতে অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন প্রায় ২০০ কোটি জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০ ০৬:২৬
Share: Save:

করোনা-সঙ্কটে চরম দারিদ্রের অতল খাদে গড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনার মুখে দাঁড়িয়ে অন্তত ৪০ কোটি ভারতীয়। সারা বিশ্বের কাজের বাজারে করোনার কামড় ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এ বার আশঙ্কার এই ছবি তুলে ধরল রাষ্ট্রপুঞ্জের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।

তাদের আশঙ্কা, করোনার তাণ্ডবে শুধু ২০২০ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে সারা বিশ্বে কাজের সময় মার যাবে ৬.৭%। যা ১৯.৫ কোটি পূর্ণ সময়ের কর্মীর কাজ খোয়ানোর সামিল। যার মধ্যে আরব দুনিয়ায় এই সংখ্যা ৫০ লক্ষ, ইউরোপে ১.২ কোটি আর এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলিতে আকাশছোঁয়া, ১২.৫ কোটি। আর এই মারণ অতিমারির আঁচ সব থেকে বেশি অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের পোহাতে হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে তারা।

আইএলও-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারা পৃথিবীতে অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন প্রায় ২০০ কোটি জন। যাঁদের বেশির ভাগই ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে। যেমন, ভারতেই মোট কর্মীর ৯০% কাজ করেন এখানে। করোনার জেরে বিশ্ব অর্থনীতির দিকে ধেয়ে আসা সুনামি সবার আগে এই অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী ও তাঁদের পরিবারকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে বলে চিন্তিত তারা। ভারতে ৪০ কোটি মানুষের কঠিন দারিদ্রের মুখে পড়ার পূর্বাভাসও সেই হিসেব থেকেই। সরকার বলা সত্ত্বেও লকডাউন শুরুর পর থেকেই বহু সংস্থা ঠিকা কর্মীদের ছাঁটাই করা শুরু করেছে বলে ইতিমধ্যে অভিযোগ তুলেছে সর্ব ভারতীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলিও।

আরও পড়ুন: ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রাপ্য আয়কর রিটার্ন মেটানো হবে দ্রুত, ঘোষণা কেন্দ্রের

সংগঠিত ক্ষেত্রেও যে ধাক্কা খুব কম হবে, এমন নয়। আইএলও-র অনুমান, সারা বিশ্বে ১২৫ কোটি মানুষ কাজ করেন এমন শিল্প কিংবা পরিষেবায়, যেখানে করোনার আক্রমণে কাজ হারানোর সম্ভাবনা প্রবল। হঠাৎ কাজ গেলে, প্রবল আর্থিক বিপর্যয়ের মুখেও পড়তে হবে তাঁদের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সব থেকে ভয়ঙ্কর সমস্যার মুখে দাঁড়িয়ে এঁদের বড় অংশকেও কাজ খোয়ানোর ধাক্কা সামলাতে হবে বলে আইএলও-র আশঙ্কা।

উদ্বেগের ছবি
• দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সব থেকে বড় সঙ্কট।
• প্রবল সমস্যায় বিশ্বের অসংগঠিত ক্ষেত্রের ২০০ কোটি কর্মী। অধিকাংশই উন্নয়নশীল দেশে।
• করোনায় কাজ যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, শুধু এমন শিল্প, পরিষেবাতেই বিশ্বে ১২৫ কোটি কর্মী।
• ভারতে চরম দারিদ্রে পড়তে পারেন ৪০ কোটি।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এস্থার ডাফলোর মতেও, ১৯২৯ সালে বিশ্ব জোড়া মন্দার পরে সারা বিশ্বের উৎপাদন যেমন বিপুল পরিমাণে সঙ্কুচিত হয়েছিল, করোনার আক্রমণে বিশ্ব বাড়িবন্দি হতে বাধ্য হওয়ায় এ বারও তেমন হওয়ার আশঙ্কা। আইএলও-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন ৮১% কর্মীই আংশিক বা পুরোপুরি কাজ বন্ধ থাকার শিকার। এই পরিস্থিতি কত দিনে স্বাভাবিক হতে পারে, সে দিকে নজর রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।

তবে তার মধ্যেও ভারতের জন্য আশার আলো দেখছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ‘‘করোনার দাপট দেখার পরে যে ভাবে সারা বিশ্বে তার টিকার খোঁজ চলছে কিংবা এর পরেও সারা পৃথিবীতে চাহিদা বাড়বে বিভিন্ন ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের, তাতে এ বারের সঙ্কট ঠিকঠাক সামাল দিতে পারলে, ওই বাজার ধরার সুযোগ আসতে পারে ভারতের সামনে। তৈরি হতে পারে আরও নানা সুযোগও।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE