চলতি অর্থবর্ষে (পড়ুন ২০২৪-’২৫) প্রভিডেন্ট ফান্ডের সঞ্চয়ের উপর ৮.২৫ শতাংশ হারে সুদ পাবেন বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা। সে ক্ষেত্রে কতটা বাড়বে ভবিষ্যতের সঞ্চয়? কী ভাবে সংশ্লিষ্ট তহবিলে জমানো অর্থের হিসাব করবেন গ্রাহক? আনন্দবাজার অনলাইনের এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের ভবিষ্যতের কথা মাথা রেখে সারা দেশে চালু রয়েছে এমপ্লোয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ইপিএফ। প্রতি অর্থবর্ষের শেষ মাসে (পড়ুন মার্চ) সেখানে সঞ্চিত অর্থের সুদের হার ঠিক করে এর নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা এমপ্লোয়িজ় প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজ়েশন বা ইপিএফও। তবে সেই সুদ সংশ্লিষ্ট তহবিলে জমা পড়তে বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়। কারণ নিয়ম অনুযায়ী, সুদের হার সংক্রান্ত প্রস্তাবটি প্রথমে শ্রম মন্ত্রকে পাঠায় ইপিএফও। এর পর তা চলে যায় অর্থ মন্ত্রকে। সেখানে ইপিএফওর প্রস্তাব মঞ্জুরি পেলে বেসরকারী সংস্থার কর্মীদের ইপিএফ তহবিলে জমা পড়ে সুদ।
একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বুঝে নেওয়া যেতে পারে। ধরা যাক, গত বছরের ১ এপ্রিল কোনও ব্যক্তির ইপিএফ তহবিলে জমা ছিল দু’লক্ষ টাকা। ২০২৪-’২৫ আর্থিক বছরে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের মূল বেতন (বেসিক পে) ৪০ হাজার টাকা হলে, তিনি প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিলে জমা করবেন ৪,৮০০ টাকা। অর্থাৎ মূল বেতনের ১২ শতাংশ বাধ্যতামূলক ভাবে জমা করতে হবে তাঁকে।
এর পর ইপিএফ তহবিলে সম পরিমাণ টাকা জমা করবে ওই ব্যক্তির নিয়োগকারী সংস্থা। অর্থাৎ গ্রাহকের সংস্থা প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিলে দেবে ৪,৮০০ টাকা। এই টাকার ৮.৬৭ শতাংশ চলে যাবে ইপিএফওর এমপ্লোয়িজ় পেনশন স্কিমে (ইপিএস)। তবে এর ঊর্ধ্বসীমা কখনই ১,২৫০ টাকা ছাপিয়ে যেতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র।
এই নিয়মে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের নিয়োগকারী সংস্থার দেওয়া অর্থের মধ্যে ৩,৫৫০ টাকা ইপিএফ তহবিলে জমা পড়বে। বাকি ১,২৫০ টাকা চলে যায়ে ইপিএসে। সব মিলিয়ে ওই ব্যক্তি প্রভিডেন্ট ফান্ড তহবিলে প্রতি মাসে জমা হবে ৮,৩৫০ টাকা। এর উপর বার্ষিক ৮.২৫ শতাংশ হারে সুদ পাবেন তিনি। ফলে ২০২৪-’২৫ আর্থিক বছর শেষে তাঁর তহবিলে সুদ বাবদ জমা হবে ২০,৯৭৭.৬৯ টাকা। এই সুদ দু’লক্ষ টাকা ব্যালেন্সের সঙ্গে যুক্ত করবে ইপিএফও। একই ভাবে পরবর্তী আর্থিক বছরেও সুদের হিসাব করবে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন এই সংস্থা।
চলতি আর্থিক বছরে (পড়ুন ২০২৪-’২৫) প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুদের হার কী হবে, তা নিয়ে ইপিএফওর অছি পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। সেখানে সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। তবে ইপিএফের আওতায় থাকা বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের বিমা প্রকল্প ইডিএলআই (ইমপ্লয়িজ় ডিপোজ়িট লিঙ্কড ইনশিয়োরেন্স)-এ যোগ করা হয়েছে বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা।