আর মাত্র দু’মাসের অপেক্ষা। তার পরেই সংসদে তৃতীয় বারের জন্য বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। বিগত বছরগুলির মতো এ বার থাকবে নতুন কী কী চমক? আয়করদাতাদের স্বস্তি দিতে হবে কোনও বড় ঘোষণা? তাই নিয়ে ইতিমধ্যেই তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা। আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, কেন্দ্রীয় বাজেটে পুরনো কর কাঠামো বন্ধের ঘোষণা হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী নির্মলা শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত নিলে আয়কর ব্যবস্থা যে আরও সহজ হবে, তা বলাই বাহুল্য।
বর্তমানে দেশে দু’টি আয়কর কাঠামো চালু রয়েছে। একটি হল পুরনো এবং অপরটি নতুন। দ্বিতীয়টির হিসাব বেশ সহজ। শুধু তা-ই নয়, নতুন কাঠামোয় করছাড়ের মাত্রাও অনেক বেশি। সেই কারণে গতে কয়েক বছরে পুরনো কাঠামো ছেড়ে নতুন কাঠামোয় চলে গিয়েছেন সিংহভাগ করদাতা। এই অবস্থায় পুরনো ব্যবস্থাটি আর চালু নাও রাখতে পারে সরকার। এর ঘোষণা আসন্ন বাজেটে হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।
আরও পড়ুন:
কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত আর্থিক বছরে (পড়ুন ২০২৪-’২৫) আয়কর রিটার্ন জমার পরিমাণ ছিল ৯.১৯ কোটি। চলতি অর্থবর্ষ (পড়ুন ২০২৫-’২৬) শেষে যা ১০ কোটিতে পৌঁছোবে বলে মনে করা হচ্ছে। রিটার্নের নথি খতিয়ে দেখে সরকার জানিয়েছে ইতিমধ্যেই নতুন কাঠামোয় চলে এসেছেন প্রায় ৭৫ শতাংশ করদাতা। এই পরিমাণ আগামী দিনে ৮০ শতাংশ ছাপিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর তাই দু’টি কাঠামো চালু রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে চলতি আর্থিক বছরের (পড়ুন ২০২৫-’২৬) জন্য পেশ করা বাজেটে আয়করদাতাদের স্বস্তি দিয়ে বড় ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা। তার পর থেকেই নতুন কর কাঠামোয় বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে করছাড় পাচ্ছেন আমজনতা। সরকারের দাবি, এর পরই নতুন কাঠামোয় রিটার্ন জমা করার হিড়িক পড়ে যায়। পুরনো ব্যবস্থা থেকে সরে আসেন চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে চিকিৎসক বা আইনজীবীর মতো পেশার রোজগেরেরা।
আরও পড়ুন:
তবে বাজেটে পুরনো কর কাঠামো বন্ধের ঘোষণার ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এর মধ্যে প্রথমেই বলতে হবে আইনগত জটিলতার কথা। সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাটিকে পুরোপুরি বন্ধ করতে হতে আয়কর আইনের বেশ কয়েকটি ধারা সংশোধন করতে হবে। বাজেট পেশের দিনই নতুন বিল এনে তা পাশ করানো বেশ কঠিন। তা ছাড়া একটি ব্যবস্থা হঠাৎ করে বন্ধ করে দিলে আয়করদাতাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হতে পারে। ফলে এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় অর্থনীতি নির্মলা সীতারমণ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই এখন দেখার।