খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার গত মাসে ২.১% ছুঁয়ে ছ’বছরের তলানিতে নামতেই সুদের হার আরও কমার প্রত্যাশা বেড়েছে। ধার শোধের মাসিক কিস্তি ফের কিছুটা কমলে হাতে কত বাড়তি টাকা থাকবে, তার অঙ্ক কষতেও শুরু করেছেন সাধারণ ঋণগ্রহীতাদের একাংশ। এই আবহে শুক্রবার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর সঞ্জয় মলহোত্র স্পষ্ট জানালেন, মূল্যবৃদ্ধির বর্তমান হার দেখে এখন আর সুদের হার ঠিক করা হবে না। বরং সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পর্যালোচনা করা হবে আগামী দিনের সম্ভাব্য মূল্যবৃদ্ধি। খতিয়ে দেখা হবে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির সম্ভাবনাও।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, অগস্ট পড়লেই শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি ঘোষণা। তার আগে মলহোত্রর এই বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ। একাংশের বক্তব্য, সুদের হার এখনই আর কমবে না, সম্ভবত এই ইঙ্গিতই দিলেন তিনি। অনেকে মনে করছেন, মূল্যবৃদ্ধির হার সরকারের খাতায়-কলমে নাগাড়ে কমলেও, অনেক ক্ষেত্রে বাজারে আনাজ কিনতে গিয়ে হাত পুড়ছে আমজনতার। দৈনন্দিন ব্যবহারের বহু জিনিসের দাম বেড়েছে। তার উপরে বিভিন্ন সমীক্ষায় দাবি, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এলেও ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা এবং শুল্ক যুদ্ধের জেরে তার মাথা তোলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই সবই হয়তো নজরে রাখছে আরবিআই।
সাধারণ ভাবে আরবিআই সুদ ঠিক করার ক্ষেত্রে চোখ রাখে খুচরো মূল্যবৃদ্ধিতে। সুদের হার কমাতে যাকে ৪ শতাংশে নামানোর লক্ষ্য বেঁধেছিল তারা। লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় চলতি বছরে ইতিমধ্যেই ১০০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছে। তাই মূল্যবৃদ্ধি আরও নামায় সুদে আরও সুরাহার আশা জেগেছে। কিন্তু তাতে জল ঢেলেছেন মলহোত্র। এক সভায় তিনি জানান, সুদ কমানোর ক্ষেত্রে তাঁদের বিবেচনায় শুধু মূল্যবৃদ্ধির বর্তমান হার থাকবে না। আগামী দিনে মূল্যবৃদ্ধি কোন দিকে হাঁটতে পারে এবং আর্থিক বৃদ্ধির গতি কী হতে পারে, সেগুলিও খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, “ঋণনীতির প্রভাব অর্থনীতিতে চটজলদি পড়ে না। কিছুটা সময় লাগে। তাই তা ঠিক করতে আগামী ১২ মাসে মূল্যবৃদ্ধি এবং আর্থিক বৃদ্ধির গতির বিষয় দু’টি গভীর ভাবে পর্যালোচনা করতে হয়।’’
মলহোত্রের বার্তা, আর্থিক বৃদ্ধির গতি বাড়াতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক উপযুক্ত আর্থিক ব্যবস্থা তৈরি করবে। তবে সুদ ছাঁটা তার একমাত্র উপায় নয়। কম খরচে মূলধনের বন্দোবস্ত করতে একাধিক অস্ত্র আছে। যদিও সেগুলি কী, তা খোলসা করেননি তিনি।
সঞ্জয়ের বার্তা
এখন ঋণনীতি ঠিক করা হয় কিছুটা পুরনো আর্থিক তথ্যের ভিত্তিতে।
সেই নীতিতে খানিকটা বদল আনা হবে।
দেখা হবে আগামী দিনের সম্ভাব্য মূল্যবৃদ্ধি।
নজরে থাকবে সম্ভাব্য আর্থিক বৃদ্ধিও।
হাতে আছে আরও কয়েকটি অস্ত্র।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)