Advertisement
E-Paper

‘অচ্ছে দিনে’ পাওনা শুধু মন বদলের তৃপ্তি

সোমবার বণিকসভা ইন্ডিয়ান চেম্বারের আলোচনা সভায় নাগাড়ে মোদী সরকারের সাফল্যের ফিরিস্তি দিয়েছেন গয়াল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৬
ভাবনা: বণিকসভায় গয়াল। সোমবার কলকাতায়। ছবি: পিটিআই।

ভাবনা: বণিকসভায় গয়াল। সোমবার কলকাতায়। ছবি: পিটিআই।

কথা ছিল, হবে অনেক চাকরি। আসবে বিপুল বিনিয়োগ। পালে হাওয়া পেয়ে অর্থনীতির নৌকা এগোবে তরতরিয়ে। আমজনতার দরজায় টোকা দেবে ‘অচ্ছে দিন’। কিন্তু চার বছর পেরিয়ে আর এক লোকসভা ভোটের দিকে পা বাড়ানো মোদী সরকার সেই হিসেব মেলাতে হয়রান। সোমবার কলকাতায় এসে ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের তাই পাল্টা প্রশ্ন, কে বলেছে উন্নয়ন হয়নি? আসলে আমজনতার নাকি তা চোখে পড়ছে না উন্নত জীবনযাত্রার খিদে বেড়ে গিয়েছে বলে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, গত চার বছরে আসল প্রাপ্তি মানসিকতার বদলই।

সোমবার বণিকসভা ইন্ডিয়ান চেম্বারের আলোচনা সভায় নাগাড়ে মোদী সরকারের সাফল্যের ফিরিস্তি দিয়েছেন গয়াল। তাঁর দাবি, সেই সব সাফল্যের মূল সূত্রই নাকি মানসিকতার বদল। দেশের মানুষের আরও ভাল থাকার আকাঙ্ক্ষা। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘তাঁরা আরও বেশি পাওয়ার জন্য লড়াই করছেন। যেন বলছেন, ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর।’’

যা শুনে বেশ কয়েক জন বিরোধী নেতার মন্তব্য, সাধারণ মানুষের সঙ্গে এ তো নির্মম রসিকতা। দেনার দায়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন যে কৃষক, পায়ে ফোস্‌কা নিয়েও যাঁরা মাঝরাতে দখল নিচ্ছেন মুম্বইয়ের, তাঁদের তো ন্যূনতম চাহিদাটুকুই মেটে না। বেশি কিছু চাওয়া তো দূর অস্ত্‌।

অনেকে আবার মনে করাচ্ছেন কাজের সুযোগ তৈরি না হওয়ার আখ্যান। লোকসভা ভোটের আগে বিপুল কাজের সুযোগ তৈরির কথা নিয়ম করে বলতেন মোদী। প্রতিশ্রুতি দিতেন বছরে দু’কোটি কর্মসংস্থানের। অথচ তাঁর জমানায় এখনও পর্যন্ত বছরে গড়ে দু’লক্ষ কাজের সুযোগ তৈরি করতেই হিমসিম কেন্দ্র। সম্প্রতি রেলের প্রায় ৯০ হাজার পদের জন্য আবেদন করেছেন আড়াই কোটিরও বেশি জন! উত্তরপ্রদেশে সরকারি অফিসে ৩৬৬টি পিওনের পদে আবেদন জমা পড়েছে ২৩ লক্ষ! সেখানে ২৫৫ জন পিএইচডি। ২ লক্ষের বেশি ইঞ্জিনিয়ার। অনেকের প্রশ্ন, এটিও কি তবে বাড়তি চাওয়া?

গয়ালের দাবি, স্বাস্থ্য, রাস্তা-বিদ্যুতের মতো পরিকাঠামো উন্নয়ন, জনধন প্রকল্প, কিংবা নিখরচায় গরিব মহিলাদের রান্নার গ্যাসের সংযোগ (উজ্জ্বলা যোজনা)— এ সবের জন্যই চাওয়ার টান বাড়ছে।

কিন্তু সমালোচকদের পাল্টা প্রশ্ন, জনধন অ্যাকাউন্ট দ্রুত খুললেও, নিয়মিত লেনদেন হয় তাদের ক’টিতে? উজ্জ্বলা প্রকল্পে তো আবার অভিযোগ, অধিকাংশ গ্রাহকই দাম বেশি হওয়ায় নিয়মিত সিলিন্ডার কিনতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে ভাবতে হচ্ছে ৫ কেজির সিলিন্ডারের কথা। কৃষি এবং বিভিন্ন সমাজিক ক্ষেত্রে গয়াল বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি করেছেন এ দিন। কিন্তু তেমনই প্রশ্ন, তা হলে একের পর এক কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে কেন?

তেলের চড়া দর প্রসঙ্গে গয়ালের দাবি, অনেকের ধারণা, তেলে কর চাপিয়ে বাড়তি ১০-১২ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে কেন্দ্র। কিন্তু আসলে তা ২.৫-৩ লক্ষ কোটির বেশি নয়। তা-ও ব্যয় করা হয়েছে ইউপিএ সরকারের ধার মেটাতে ও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় অপর্যাপ্ত বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন অবশ্য সেই থাকছেই।

রাজ্যগুলির আস্থা জিতে জিএসটি চালুকে সাফল্য হিসেবে দাবি করেন গয়াল। কিন্তু বিজেপির ব্যবসায়ী ‘সেল’ ও আরএসএসের ছোট ব্যবসায়ীদের সংগঠনের বৈঠকে তা নিয়েই ক্ষোভের মুখে পড়েন। ‘কম্পোজিট’ প্রকল্পের আওতায় ব্যবসার সীমা অবশ্য এক কোটি থেকে বাড়িয়ে দেড় কোটি করার আশ্বাস দিয়েছেন গয়াল।

Piyush Goyal Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy